সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সত্যিই কত বদলে গিয়েছে ভারতীয় ফুটবল। প্র্যাকটিস শেষ করে এক এক করে বের হচ্ছেন সবুজ-মেরুন (Mohun Bagan) ফুটবলাররা। প্রথমে বেরিয়ে এলেন সাহাল আবদুল সামাদ। গিয়ে বসলেন, ‘কিউ’ সিরিজের বিএমডব্লুতে। যে গাড়ির আনুমানিক মূল্য কম করে ৭৫-৮০ লক্ষ টাকা! এরপরেই বার হলেন মনবীর সিং। বসলেন নিজের অডি গাড়িতে। দেখতে সত্যিই ভাল লাগছিল। কলকাতার টিমের ফুটবলারদের কাছে বিএমডব্লু, অডি চেপে প্র্যাকটিসে আসা শিল্পপতিদের অফিসে যাওয়ার মতোই জলভাত! মাঠের ভিতরে কতটা বদল আসছে এখনই বলা সম্ভব নয়। কিন্তু আইএসএলের দৌলতে এখন সত্যিই বদলে গিয়েছে ভারতীয় ফুটবলের মাঠের বাইরের চিত্রটা।
এখনই শুরু হচ্ছে না আইএসএল। কলকাতা লিগের পাশাপাশি এখন চলছে ডুরান্ড কাপ। বৃহস্পতিবার কলকাতা লিগে এফসিআই-এর বিরুদ্ধে ম্যাচ থাকলেও মোহনবাগান সমর্থকদের পাশাপাশি দলের মধ্যেও এখন বেজে গিয়েছে ডুরান্ডের ডার্বির দামামা। আর ডার্বির আগে এদিন দল নিয়ে কোচ জুয়ান ফেরান্দো আর সহকারী ক্লিফোর্ড মিরান্ডার সঙ্গে আলোচনায় বসে গেলেন দলের টিডি আন্তেনিও লোপেজ হাবাসও। টিডি হিসেবে শহরের আসার পর এদিনই প্রথম সিনিয়র দলের প্র্যাকটিস দেখতে মাঠে গিয়েছিলেন হাবাস (Antonio Lopez Habas)। হুগো বুমোসরা যখন ফেরান্দোর কাছে প্র্যাকটিস করছিলেন, পুরো দলটাকে বোঝার জন্য দলের সিইও বিনয় চোপড়াকে সঙ্গী করে লিফট দিয়ে গ্যালারির উপরে সোজা ভিআইপি বক্সে উঠে এলেন হাবাস। তারপর চুপ করে উপর থেকে মন দিয়ে প্র্যাকটিস দেখতে লাগলেন দু’দুবার আইএসএল জয়ী কোচ। মাঠের ভিতর ফুটবলারদের তখন একমনে প্র্যাকটিস করাচ্ছেন ফেরান্দো। আর গ্যালারির উপরে বসে একমনে তা দেখে যাচ্ছেন হাবাস। হয়তো দেখতে দেখতে নিজের সোনালি দিনগুলিতে ফিরে যাচ্ছিলেন।
[আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে ছাত্রের মৃত্যু, তদন্তে অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড]
তিনি দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। তাই ঠিক করেছেন, ফেরান্দোর প্র্যাকটিস চলাকালীন কোনওদিনই ড্রেস পরে ফেরান্দোর প্র্যাকটিসে ঢুকে পড়বেন না। টিডি হিসেবে ম্যানেজমেন্টের কাছে দলের রিপোর্ট দেবেন মাঠের বাইরে বসেই। এদিন ফেরান্দোর প্র্যাকটিস শেষ হতেই বিনয় চোপড়ার সঙ্গে উপর থেকে দ্রুত নেমে এলেনে তিনি। যেই ভিআইপি বক্স থেকে নীচে নেমেছেন, সঙ্গে সঙ্গে সবুজ-মেরুন সমর্থকরা ঘিরে ফেলেন তাঁকে। মোহনবাগান সমর্থকদের দেখে হাবাস বলে ওঠেন, ‘জয় মোহনবাগান।’ সমর্থকরা সেলফি তোলার আবদার করেন হাবাসের কাছে। সকলের আবদারে সেলফি তোলা শেষ হলে হাবাস এরপর মাঠের ভিতরে যান কোচ ফেরান্দোর সঙ্গে দেখা করতে। নিজেদের মধ্যে একপ্রস্থ কথা বলার পর দু’জনেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে এসে ঢোকেন নিজেদের ড্রেসিংরুমে। সেখানে তখন হাজির সহকারী ক্লিফোর্ড মিরান্ডাও।
এ তো গেল ডুরান্ডের প্রস্তুতি। সকালেই রিজার্ভ দলের কোচ বাস্তব রায়ের কাছে প্র্যাকটিস করেছেন রিজার্ভ দলের ফুটবলাররা। কারণ, বৃস্পতিবার নিজেদের মাঠে লিগের সপ্তম ম্যাচে এফসিআইএর বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন তাঁরা। এই মুহূর্তে ৬টি ম্যাচ খেলে কলকাতা লিগে মোহনবাগান দলের মোট পয়েন্ট ১৬। সেখানে সমসংখ্যক ম্যাচে এফসিআই-এর মোট পয়েন্ট মাত্র ৩। শুধুমাত্র এই তথ্য থেকেই পরিস্কার, বৃহস্পতিবার ম্যাচে কী হতে চলেছে। সমর্থকরা শুধু দেখতে চান, ডার্বির আগে লিগের ম্যাচেও মোহনবাগান ফুটবলাররা কতটা উজ্জীবিত।