প্রসূন বিশ্বাস: প্রবল গরম, নাকি রয় কৃষ্ণ? রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় মোহনবাগানকে (Mohun Bagan) যুবভারতীতে কোনটা বেশি সমস্যায় ফেলবে, এখন সেই প্রশ্নই ঘুরছে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের মনে।
গরম ফ্যাক্টর মানতেই হবে। বিশেষ করে বিদেশি ফুটবলারদের কাছে। তবে এই প্রবল গরমেও যেন প্রবল পরাক্রমী হয়ে উঠছেন ওড়িশার (Odisha FC) বিদেশি রয় কৃষ্ণ। হাবাস বুঝেছেন, ফাইনালে উঠতে হলে তাঁর প্রথম কাজ রবিবার সন্ধ্যায় রয় কৃষ্ণকে গোল করতে না দেওয়া। গত ম্যাচেও হাফ চান্সকে কাজে লাগিয়ে গোল করে ওড়িশাকে জিতিয়েছেন কৃষ্ণ। তাই সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের চব্বিশ ঘণ্টা আগে হাবাস বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন হেক্টর ইউয়েস্তাদের। কৃষ্ণ প্রসঙ্গ উঠতেই মোহনবাগান কোচ বলেন, “ও খুব বুদ্ধিমান ফুটবলার। গত ম্যাচেও গোল করে গিয়েছে। ওকে কোনও মতেই সুযোগ দেওয়া যাবে না।” গত ম্যাচে হেক্টর ইউয়েস্তাকে বোকা বানিয়ে গোল করে গিয়েছিলেন ওড়িশার এই বিদেশি ফুটবলার। এদিন মোহনবাগান অনুশীলনের শুরুতেই হেক্টরের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা গেল হাবাসকে। কী আলোচনা হল, তা তাঁরা দু’জনই একমাত্র বলতে পারবেন। কৃষ্ণকে আটকাতে কি নিজের পরিচিত ফর্মেশন বদলে রক্ষণে ফুটবলার বাড়াবেন হাবাস? নিজেই জানাচ্ছেন, এই অল্প সময়ের মধ্যে ফর্মেশন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে চাইছেন না। হাবাস বলে দেন, “দু’তিন দিনের মধ্যে এভাবে ফর্মেশন বদল করা সম্ভব নয়।”
[আরও পড়ুন: পিচ খারাপ হলে নারিন ভালো বল করলেন কীভাবে? সমালোচনার কড়া জবাব ইডেন কিউরেটরের]
এবার আসা যাক কলকাতার প্রবল গরমের প্রসঙ্গে। গরমের কথা মাথায় রেখে হাবাস চাইছেন অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচকে না নিয়ে গিয়ে নব্বই মিনিটের মধ্যে দুই গোলে জিতে ফাইনালে যেতে। আসলে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ১-২ গোলে হারের জন্য ঘরের মাঠে মোহনবাগানকে দু’গোলে জিততে হবে ফাইনালে যাওয়ার জন্য। যদি এক গোলে জয় আসে, তাহলে অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়াবে। সেখানেও যদি ফলাফল পরিবর্তন না হয়, তাহলে তারপর টাইব্রেকারে খেলার নিষ্পত্তি হবে। অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচটিকে নিয়ে যেতে চাইছেন না হাবাস। ওড়িশার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে দ্বিতীয় লেগে নামার আগের দিন হাবাস বলছিলেন, ‘‘গরম অবশ্যই সমস্যা করতে পারে। তাই আমরা নব্বই মিনিটেই ম্যাচের ফয়সলা করতে চাই।” পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, “দুই কোচই অতিরিক্ত সময়ের কথা মাথায় রাখছে। আমাদের বেঞ্চে অবশ্য তিরিশ মিনিট বেশি খেলার জন্য ভালো ফুটবলার রয়েছে।” শনিবার সন্ধ্যায় দলের অনুশীলনের সময়েও বারবার মুখে চোখে জল দিতে দেখা গেল হাবাসকে। এমনকী, অনুশীলনের প্রথম পনেরো মিনিটের মধ্যেই কামিংসদের দু’বার জলপানের বিরতিও দিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: এবার ইস্টবেঙ্গলের পথে মোহনবাগানের ‘ঘরের ছেলে’ প্রীতম কোটাল! তুঙ্গে জল্পনা]
কার্ড সমস্যার জন্য মোহনবাগান যেমন এই ম্যাচে পাচ্ছে না আর্মান্দো সাদিকুকে, ঠিক তেমনই ওড়িশাও একই কারণে পাচ্ছে না কার্লোস দেলগাডোকে। সাদিকুর বদলে জেসন কামিংসকে রবিবার শুরু থেকে খেলাবেন হাবাস। পুরোদমে অনুশীলন করলেন সাহাল আব্দুল সামাদও। গত ম্যাচে কার্ড সমস্যার জন্য খেলতে না পারা ব্রেন্ডন হ্যামিলও ফিরছেন এই ম্যাচে। ব্রেন্ডন ফিরলে রক্ষণের সমস্যা কিছুটা মিটতে পারে মোহনবাগানের। এদিন কোচের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন গত ম্যাচের গোলদাতা মনবীর সিং। তিনি আশাবাদী এই মরশুমে তৃতীয় ট্রফি জয়ের বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘‘এই মরশুমে আমাদের তৃতীয় ট্রফি জয়ের সুযোগ সামনে রয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে শেষ হতে দেব না। প্রতিপক্ষ ভালো হলেও আমরা ফাইনালে যাওয়ার জন্য আশাবাদী।”
ক্লাব ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে এই ম্যাচে সমর্থকদের মাঠে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। লিগ পর্বের মুম্বই ম্যাচে এমনই আহ্বানেই ষাট হাজার মোহনবাগান সমর্থক মাঠে এসেছিলেন। রবিবার সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি চায় সবুজ-মেরুন শিবির।
এদিন আশিক কুরুনিয়ন যোগ দিলেন মোহনবাগান অনুশীলনে। মরশুমের শুরুতেই চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছিলেন আশিক। আপাতত ফিট করার জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।