ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: গুরুং বাহিনীকে বাগে আনতে প্রশাসন সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছে। বিমল গুরুংয়ের বাড়ি খেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, নথি ও নগদ। মোর্চা এর জবাব দিতেই ফের নতুন করে অশান্ত পাহাড়। জবাব দিতে পুলিশকে লক্ষ করে ইটবৃষ্ট, এসপির গাড়ি, পুলিশ ফাঁড়ি ও একাধিক সরকারি অফিসে আগুন। ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে পুলিশের ওপর গেরিলা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে মোর্চার বিরুদ্ধে। বনধের চতুর্থ দিনে আক্ষরিক অর্থেই পাহাড় অশান্ত।

[গুরুংয়ের ডেরায় অস্ত্র ভাণ্ডারের খোঁজ, চাপানউতোর]
কিছু বোঝার আগে বিমল গুরুংয়ের বাড়ির দখল নেওয়া। মোর্চা সুপ্রিমোর খাসতালুক পাতলেবাস থেকে বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধার। বাজেয়াপ্ত নগদ এবং নথি। পুলিশের কড়াকড়িতে দলের একাধিক কর্মসূচি বাতিল হয়ে যাওয়া। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ও আধা সেনার সাঁড়াশি অভিযানে কার্যত দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল মোর্চা। গুরুংয়ের বাড়ি থেকে তল্লাশি শেষ করে পুলিশ বের হওয়ার সময় জড়তা কাটিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে মোর্চা সমর্থকরা। বিক্ষোভে সামনের সারিতে ছিলেন নারী মোর্চার সদস্যরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পুলিশ পাল্টা তেড়ে গেলে পাহাড়ের উপর থেকে পুলিশের দিকে ইট ছোড়া হয়। মোর্চার এই কৌশলে কার্যত আটকে পড়েছিল পুলিশ। পরে কোনওরকমে তারা এলাকা ছাড়ে।
[পাকিস্তানে মুক্তি পিছিয়ে গেল সলমনের ‘টিউবলাইট’-এর]
পাতলেবাস ছাড়ার পর থেকেই পুলিশ মোর্চার নিশানার মুখে পড়ে। অভিযোগ, দার্জিলিংয়ের এসপি অখিলেশ চর্তুবেদীর গাড়ি লক্ষ করে ইট ছোড়া হয়। পুলিশ সুপারের গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করেন। এমন সময় মোর্চা সমর্থকরা এসপির গাড়িতে পেট্রোল বোমা ছোড়ে। মুহূর্তের মধ্যে গাড়িতে আগুন লেগে যায়। একটি সংবাদমাধ্যমের গাড়িতেও তারা অগ্নিসংযোগ করে। ইটের ঘায়ে কয়েকজন পুলিশকর্মী ও সাংবাদিক আহত হন। এরপর থেকে পাহাড় জুড়ে প্রশাসনের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে থাকতে মোর্চা। পেডংয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কালিম্পংয়ের তিস্তা বাজারে সেরিকালচার অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাশাপাশি কালিম্পংয়ে হিলটপ ট্যুরিস্ট লজেও আগুন লাগানোর চেষ্টা চলে। মোর্চার ডাকা অনির্দিষ্টকালের বনধে চতুর্থ দিনেই সবথেকে অশান্তি ছড়াল। দলের সভাপতির বাড়িতে অভিযান চলার পর থেকে পুলিশ, প্রশাসনের ওপর পাল্টা মারের রাস্তা নিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড়ের রাস্তাঘাট এমনিতেই দুর্গম। এই মুহূর্তে বর্ষা এবং আবহাওয়ার জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই আবহাওয়া এবং পরিবেশের সঙ্গে অভ্যস্ত মোর্চা ভৌগলিক সুবিধা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
বেলা বাড়তেই মোর্চা পাল্টা মারের রাস্তা নিলেও প্রশাসন সহজে পিছু হটছে না। গুরুংদের ওপর চাপ বাড়াতে সমতল থেকে প্রচুর বাহিনী যাচ্ছে পাহাড়ে। পাতলেবাসে গুরুংয়ের বাড়িকে ঘিরে রয়েছে ৯টি গ্রাম। সবকটি গ্রামে বাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
The post গুরুংয়ের বাড়িতে পুলিশি অভিযান, পাহাড়ে তাণ্ডব চালিয়ে মোর্চার প্রত্যাঘাত appeared first on Sangbad Pratidin.