সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাদার হাউস থেকে কয়েক পা হাঁটলেই পড়ে দোকানটি৷ আলগোছে হাঁটতে হাঁটতে অনেকেই ঢুকে পড়েন৷ আর তারপরই শুরু চমকের৷ একটা গোটা দোকানের যেদিকে তাকানো যায়, শুধুই মাদার টেরিজা৷ কোনও ব়্যাকে সারি সারি সাজানো আছে মাদারের মূর্তি৷ কোথাওবা সাজিয়ে রাখা মাদারের উক্তি সম্বলিত কার্ড৷ এমনকী লকেট থেকে শুরু করে ক্রুশ, কফি মাগ, পেন-হেন জিনিস নেই যেখানে মাদারের চিহ্ন নেই৷ নাহ, ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’ পরিচালিত কোনও দোকান নয় এটি৷ এ দোকানের মালিক কলকাতার নুরুল ইসলাম৷
সেবায় যতই নিষ্ঠ থাকুন না কেন, ধর্মপ্রচারের সমালোচনা বরবরাই বিদ্ধ করেছে মাদারকে৷ এমনকী তাঁর মৃত্যুর এই ১৯ বছর পরেও শোনা যায়, তিনি আসলে ছিলেন ধর্মপ্রচারকই৷ কিন্তু সমালোচনার হিড়িকে প্রায়শই ভুলে যাওয়া হয়, যে অঞ্চলে মাদার হাউস সেখানে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যাই বেশি৷ আজও তাই-ই দস্তুর৷ মাদার কিন্তু ধরে ধরে তাঁদের খ্রিস্টান ধর্মে রূপান্তরিত করেননি, বা ওই এলাকাকে খ্রিস্টান পল্লি করে তোলেননি৷ মাদারের ধর্ম যে কোনও বিভাজনের নয়, তার আর এক প্রমাণ যেন এই নুরুল ইসলাম ও তাঁর দোকান৷
একজন ইসলাম ধর্মের মানুষের দোকানে খ্রিষ্টান ধর্মের হাজারো সামগ্রী দেখে চমকে যান অনেকেই৷ কিন্তু আসল যোগসূত্র কোনও ধর্ম নয়৷ যিনি এই মেলবন্ধনটি করতে পেরেছেন তিনি মাদার স্বয়ং৷ অবশ্যই এ দোকান থেকেই নুরুলের রুটি-রুজি উপার্জন৷ কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়েও মাদারের মূর্তি সাজানো দোকান গড়ে তুলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি নুরুল৷
শহরবাসী থেকে শহরে আগত বিদেশীরা তাঁর দোকানে মাদারের ছোঁয়ামাখা সামগ্রী দেখে বিস্মিত হন৷ আর সকল সমালোচককে বিস্মিত করে নুরুল নিজে দাঁড়িয়ে থাকেন সেই ভূমিতে, যা বলে দেয় ধর্মপ্রচারকের বাইরে মাদার সত্যিই প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন ধর্মের বিভাজনহীন মানবধর্ম৷
The post মাদারের চিহ্নে আজও সেজে আছে নুরুলের দোকান appeared first on Sangbad Pratidin.