রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শাখার পরই সিপিএমে CPM) এরিয়া কমিটির ভূমিকা পার্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দলের বহু এরিয়া কমিটির পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নয় আলিমুদ্দিন । গত পার্টি সম্মেলনের সময়ও এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। একবছর পরও বিরাট কোনও পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি এরিয়া কমিটির (Area Committee) কাজে। রাজ্যে এরিয়া কমিটির সংখ্যা প্রায় ৮০০। সাংগঠনিক কার্যধারা, আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একাধিক এরিয়া কমিটির ভূমিকা নিয়ে খুশি নয় রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। সমস্ত এরিয়া কমিটির সম্পাদকরা পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী নয়, এরিয়া কমিটির সদস্যদের গুণগত মান যথেষ্ট উন্নত হওয়া প্রয়োজন বলেই মনে করছে রাজ্য কমিটি।
কিন্তু এরিয়া কমিটি গঠনের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এই দুর্বলতা কাটানো যায়নি। পার্টি কমিটিগুলির দুর্বলতার জন্য কর্মসূচি রূপায়ণের ক্ষেত্রেও ঘাটতি থাকছে বলে মানছে সিপিএম নেতৃত্ব। বহু ক্ষেত্রেই স্থানীয় স্তরে কর্মসূচি জনমানসে দাগ কাটতে পারছে না। এমনই রিপোর্ট পার্টির অভ্যন্তরে। জেগে উঠতে গিয়েও সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে হোঁচট খেতে হয়েছে সিপিএমকে। প্রচারে জমায়েত, সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ঝড় তোলা, ‘বাম পথে গ্রাম’ স্লোগান, সবই ছিল। কিন্তু আশানুরূপ ফল হয়নি পঞ্চায়েতে।
[আরও পড়ুন: ‘জোটে লাভ নেই, নির্দিষ্ট ইস্যু নিয়ে জনতার কাছে যেতে হবে’, INDIA-র সমালোচনায় পিকে ‘স্যর’]
সামনে চব্বিশের লোকসভা ভোট (Lok Sabha Election 2024)। তার আগে জনমানসে প্রভাব বিস্তার না করতে পারলে ভাল ফল সম্ভব নয়। এর জন্য নিচুতলায় দলীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু নিচুতলায় একাধিক এরিয়া কমিটির পারফরম্যান্সে খুশি নয় সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। পার্টির নেতৃত্ব মনে করছে, এরিয়া কমিটির ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে অসাম্য রয়ে গিয়েছে। এরিয়া কমিটির পাশাপাশি শাখা কমিটির সক্রিয়তা বুথে বুথে সংগঠন শক্তিশালী করে। পার্টির কাছে রিপোর্ট, প্রতিটি বুথে সংগঠন গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হলেও সেই কাজে দুর্বলতা রয়ে গিয়েছে। রাজ্যের এক নেতার কথায়, বুথের টিমই হচ্ছে আসল, যাঁরা জনগণের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ রক্ষা করতে পারে। সেই বুথ শক্তিশালী না হলে, মানুষের কাছে পৌঁছতে না পারলে নির্বাচনে ভাল ফল সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত, যাদবপুরে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য]
এদিকে, পার্টি লাইন বোঝাতে সদস্যদের জন্য পাঠচক্র (Party Class) চলছে। সেখানে INDIA জোট নিয়ে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি কাটানোর পাশাপাশি সেই পাঠচক্রের পুস্তিকায় শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এক, জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে এরকম পার্টি তৈরি করতে হবে। দুই, জনসাধারণের মধ্যে পার্টির যোগাযোগ ও প্রভাবকে প্রসারিত করা এবং বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে সমবেত করা। তিন, কলকাতা প্লেনামের নির্দেশিকা অনুযায়ী পার্টি সদস্যদের গুণগত উন্নতি সাধনের মাধ্যমে পার্টি সংগঠনকে শক্তিশালী করা। চার, পার্টির প্রতি যুবসমাজ ও মহিলাদের আগ্রহী করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ।