সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচন অতীত! গাঁটের কড়ি খরচ করলেই মিলবে গ্রামপ্রধান বা সরপঞ্চের পদ। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে এমন নজির দু’টি আছে কিনা জানা নেই। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) অশোকনগর জেলার ভাটাউলি গ্রাম পঞ্চায়েতের এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছে। গ্রামবাসীরা ভোট দিয়ে সরপঞ্চ নির্বাচনের ‘ঝক্কি’তে না গিয়ে পদটি নিলামে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যিনি সবচেয়ে বেশি টাকা দেবেন, গ্রামের নেতা তিনিই। সৌভাগ্য সিং নামে এক ব্যক্তি ৪৪ লাখ টাকা দিয়ে সরপঞ্চের মসনদে বসে গিয়েছেন।
ভাটাউলি গ্রামের ঘটনা দেশের গণতন্ত্রের যেন ভিতটাকেই ধাক্কা দিয়েছে। অনেকগুলি প্রশ্ন উঠে এসেছে। তবে কি জনতা নির্বাচন পদ্ধতির উপর আস্থা হারিয়েছে? নেতারাও কি গণতন্ত্র সম্পর্কে হতাশ? নাকি শাসক ও শাসিতের মধ্যে সমঝোতাটা আর কোনও রাখঢাক রাখল না? টাকা ঢেলেই যদি ভোটে জিততে হয় তবে ভোটের নামে আর প্রহসন কেন! একদিকে, সরকার যখন নির্বাচনী সংস্কারের পথ খুঁজতে ব্যস্ত, সেই সময় সৌভাগ্যের মতো নেতারা ‘নির্বাচন’ শব্দটিকেই গণতন্ত্রের অভিধান থেকে মুছে ফেললেন কীভাবে?
[আরও পড়ুন: অক্সিজেনের অভাবে উত্তরপ্রদেশে কোনও করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি! দাবি যোগী সরকারের]
যদিও স্থানীয় প্রশাসন বলছে এই ধরনের ‘চুক্তি’ বরদাস্ত করা হবে না। নির্বাচন হবেই। রাজধানী ভোপাল থেকে মাত্র চার ঘণ্টার দূরত্বে ভাটাউলি গ্রাম। সেখানকার লোকজন বলছেন, কীসের নির্বাচন। তাঁরা একটি ত্রুটিহীন প্রগতিশীল পদ্ধতি ভেবে ফেলেছেন। তাঁরা এটাই নিশ্চিত করেছেন, কোনও ভোটপ্রার্থী আর ভোট ‘কেনার’ জন্য নগদ অর্থ ও মদ বিলি করবেন না। স্থানীয় মন্দিরে সরপঞ্চ পদের নিলাম হয়েছে। ২১ লাখ টাকা থেকে ডাক শুরু হয়। সৌভাগ্য সিং ৪৪ লাখ টাকার ডাক দিতেই হাতুড়ি পড়ে। তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে সৌভাগ্যের বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী হবেন না। অর্থাৎ, তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটে সরপঞ্চ নির্বাচিত হবেন।
জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারিতে মধ্যপ্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচন। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ভাটাউলি গ্রামের ঘটনাটি তাঁরাও শুনেছেন। নিয়ম মেনেই ইচ্ছুক প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশ করতে হবে। ওই ব্যক্তিও করবেন। যদি তাঁর মনোনয়ন ঠিক থাকে এবং আর কোনও প্রার্থী না থাকে, তবে তাঁকেই বিজয়ী ঘোষণা করতে হবে।