শুভঙ্কর বসু: মুকুল রায়কে (Mukul Roy) রাজ্য বিধানভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (PAC) চেয়ারম্যান করা নিয়ে দায়ের হওয়া মামলাটি কেন জনস্বার্থ মামলা হিসেবে গৃহীত হবে, তা নিয়ে জবাব তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।
মুকুল রায়কে রাজ্য বিধানসভার PAC’র চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মঙ্গলবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নদিয়ার কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) অম্বিকা রায়। এ নিয়ে তিনি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা কেন জনস্বার্থ মামলা হিসেবে আদালতে গ্রাহ্য হবে, তা আগামী ৪ অগস্টের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আকারে মামলাকারীকে জানাতে বলেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যকে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র চিকিৎসকে হেনস্তা রোগীর পরিবারের, নাম জড়াল বিধায়ক নির্মল মাজির]
মামলায় অম্বিকা রায়ের দাবি ছিল, সংসদীয় এবং পরিষদীয় প্রথা অনুযায়ী PAC চেয়ারম্যানের পদ প্রধান বিরোধী দলের প্রাপ্য। মুকুল রায় প্রকাশ্যে দলত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) যোগদান করেছেন। তাছাড়া ওই পদের জন্য তিনি বিজেপি মনোনীত প্রার্থীও ছিলেন না। তা সত্ত্বেও প্রথা অগ্রাহ্য করে যে ভাবে মুকুলকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী পি এস নরসিংহ আদালতে সওয়াল করে বলেন, “ওই কমিটির চেয়ারম্যান পদের কাজটি জনস্বার্থমূলক। সরকারের আয়ব্যয়ের সঙ্গে বিধানসভার ওই কমিটির সম্পর্ক রয়েছে। বিরোধীরা এর দাবিদার হলেও চেয়ারম্যান নির্ণয়ে স্পিকারের ‘নিরপেক্ষ’ ভূমিকা ছিল না। বেআইনি ভাবে মুকুল রায়কে ওই পদে নিয়োগ করা হয়েছে।”
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত পাল্টা জানান, শাসকদলের কোনও বিধায়ক ওই পদে মনোনীত হননি। মনোনীত হয়েছেন বিরোধী দলেরই এক বিধায়ক। এখন তিনি দলবদল করেছেন। যা নিয়ে বিধানসভায় শুনানি চলছে। অ্যাডভোকেট জেনারেল আরও বলেন, সংবিধানের ২১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিধানসভার অন্তর্বর্তী কোনও কমিটির চেয়ারম্যান নির্নয়ের ক্ষমতা স্পিকারের রয়েছে। সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী এতে হস্তক্ষেপ করা যায় না। এর সঙ্গে জনস্বার্থ সম্পর্কিত কোনও বিষয় সরাসরি যুক্তও নয়। ওই কমিটিতে শাসকদলের পাশাপাশি বিরোধীরাও রয়েছেন। দু’পক্ষের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মামলাটি আদৌ জনস্বার্থ মামলা হিসেবে গৃহীত হয়, নাকি দু’পক্ষের বক্তব্য জানার পর তা নির্ধারণ করবে হাই কোর্ট। আগামী ১০ অগস্ট ফের ফের এই মামলার শুনানি।