গৌতম ব্রহ্ম: সিসিইউ অমিল। কিন্তু রোগীর চাই ভেন্টিলেশন সাপোর্ট। কারণ মুখ থেকে গ্যাজলা উঠছে। লোপ পেয়েছে চেতনা। শুরু হয়েছে তীব্র শ্বাসকষ্ট। ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর ছায়া। এই অবস্থায় রাতারাতি অস্থায়ী সিসিইউ বানিয়ে একটি আম্বু ব্যাগ ও মাস্কের সাহায্য ‘ভেন্টিলেট’ করা হল এক সাপে-কাটা রোগীকে। রাত একটা থেকে সকাল সাতটা-টানা ছ’ঘণ্টা ধরে চলল সেই জীবনদায়ী ভেন্টিলেশন। যমদুয়ার থেকে ফিরল রোগী। নয়া নজির গড়ল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল (Jangipur Hospital)।
নন্দিতা দাস। বাড়ি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) রঘুনাথগঞ্জ লবণছায়া গ্রামে। ৯ জুন রাতের অন্ধকারে সাপে কেটেছিল তিরিশ বছরের এই বধূকে। রাতের অন্ধকারে সাপের চেহারা ঠাহর করা যায়নি। সকালে উঠে তলপেটে ব্যথা ও গা গোলানো শুরু হয় নন্দিতার। স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে। কিন্তু উপসর্গ বাড়তেই থাকে। অবশেষে রাত ন’টা নাগাদ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্রমশ নেতিয়ে পড়ছিলেন রোগী।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে প্রচুর কর্মসংস্থান, দু’হাজার পদে কর্মী নিয়োগ PSC’র, প্রকাশিত নামের তালিকা]
একটা সময় চেতনা হারান নন্দিতা। প্রয়োজন হয় ভেন্টিলেশনের। যা জাঙ্গিপুরে অমিল। সিসিইউ আছে এমন উচ্চতর হাসপাতালে রেফার করে দায় সারতেই পারতেন ডাক্তারবাবু। সেক্ষেত্রে রাস্তাতেই প্রাণ হারাতেন রোগী। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে রোগীর প্রাণ বাঁচাতে লড়ে গেলেন ডাক্তারবাবু ও নার্সরা।
মিনিটে বারো থেকে আঠারোবার করে প্রায় সা়ড়ে ৮ হাজার বার টানা পাম্প করলেন আম্বু ব্যাগ। সিসিইউ ইনচার্জ ডা. সাধন ভক্ত থেকে হাসপাতালের সুপার অবিনাশ কুমার, প্রত্যেককে যুদ্ধে নামলেন। রোগীকে ইনটিউবেট করে একটি এয়ার ব্যাগ ও মাস্কের সাহায্যে ভেন্টিলেট করতে শুরু করলেন। অবশেষে রোগীর চেতনা ফিরতে শুরু করে।