সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউনে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জীবন। করোনাকে দূরে রাখতে গৃহবন্দি দশাই এখন একমাত্র উপায়। এমন পরিস্থিতিতে কারও মৃত্যু হলেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বাড়ির লোকেদের। ঠিক যেমন বিপাকে পড়ল ইন্দোরের এক পরিবারকে। একেতে করোনা আতঙ্কে কেউই মৃতদেহ সৎকারে যেতে চাইছে না। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো আবার অমিল গাড়ি। এমন অবস্থায় হিন্দু মহিলার সৎকারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন প্রতিবেশী মুসলিম যুবকরা।
দেশজুড়ে করোনা আতঙ্কের মধ্যে কারও মৃত্যু হলেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে। মনে প্রশ্ন উঠছে নেপথ্য কারণ করোনা নয় তো? আর ঠিক এই ভয় থেকেই মৃতদেহ সৎকার থেকে বিরত থাকছেন আত্মীয়-পরিজনরা। একই ছবি দেখা গেল মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। সোমবার মৃত্যু হয় ৬৫ বছরের প্রৌঢ়ার। দীর্ঘদিন ধরে অসুখে ভুগছিলেন তিনি। রেখে গেলেন দুই ছেলেকে। লকডাউনের জেরে মায়ের কাছে পৌঁছতেই অনেকটা সময় লেগে যায় তাঁদের। যাও বা পৌঁছলেন, গাড়ির অভাবে শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়াই মুশকিল। অসহায় পরিবারকে দেখে এগিয়ে আসেন আশপাশের মুসলিম যুবকরা। মৃতাদের কাঁধে নিয়েই প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ অতিক্রম করলেন তাঁরা। মৃতার দুই ছেলের সুবিধার্থে সৎকারের সমস্ত ব্যবস্থাও করলেন। লকডাউনের মাঝে মুসলিম যুবকদের এই মানবিক রূপের ছবি-ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সকলেই তাঁদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: ‘লুকিয়ে থাকা তবলিঘি জামাতিদের গুলি করা ভুল নয়’, মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের]
সে রাজ্যের কংগ্রেসের মুখপাত্র নরেন্দ্র সালুজা খবরটি নিশ্চিত করে যুবাদের প্রশংসা করেছেন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথও সম্প্রীতির ছবি দেখে মুগ্ধ। টুইটারে লেখেন, “মৃতাকে কাঁধে তুলে সৎকারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন মুসলিম যুবকরা। সঙ্গে মৃতার দুই ছেলে। সত্যিই তাঁরা সমাজের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এটাই আমাদের সম্প্রীতির ছবি।” যুবকরা জানিয়েছেন, ওই প্রৌঢ়াকে ছোটবেলা থেকেই চিনতেন তাঁরা। তাঁর চোখের সামনেই বড় হয়েছেন। তাই এমন সংকটের দিনে মৃতার ছেলেদের পাশে দাঁড়ানো নিজেদের কর্তৃব্যই ভেবেছেন।
দিন কয়েক আগে অনেকটা এমন ছবিই দেখা গিয়েছিল বুলন্দশহরে। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় প্রৌঢ় রবিশংকরের। প্রতিবেশীরা মনে করেছিলেন করোনা সংক্রমণের জেরেই হয়তো মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তাই শেষ দেখাটুকুও কেউ দেখতে আসেননি। শেষমেশ পাড়ার পাশের মুসলিম অধুষ্যিত এলাকার যুবকরাই সমস্যা মেটান। অসহায় পরিবারের চরম বিপদে পাশে দাঁড়ান তাঁরা। মাথায় ফেজ টুপি পরে ‘রামনাম সত্য হ্যায়’ ধ্বনি তুলে শ্মশান অবধি মৃতদেহ নিয়ে যান তাঁরাই।
[আরও পড়ুন: ‘হটস্পট’ থেকে শূন্য সংক্রমণ! করোনা নিয়ন্ত্রণে গোটা দেশের ‘মডেল’ রাজস্থানের এই শহর]
The post লকডাউনের জেরে অমিল গাড়ি, হিন্দু প্রৌঢ়াকে কাঁধে তুলে শ্মশানে নিয়ে গেলেন মুসলিম যুবকরা appeared first on Sangbad Pratidin.