সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের মুখে তাঁর ছোট্ট একটি মন্তব্য। এই নিয়ে তোলপাড় দেশ। সোনিয়া গান্ধী জানিয়ে দিলেন আর তিনি রাজনীতিতে থাকছেন না। এখন অবসরের সময়। এই নিয়ে শোরগোল পড়ার পর আসরে নামে কংগ্রেস নেতৃত্ব। তারা জানায় সভানেত্রীর দায়িত্ব ছাড়লেও রাজনীতিতে থাকবেন সোনিয়া। তিনি কংগ্রেসকে পথ দেখাবেন।
[সমস্ত ক্ষেত্রে আধার যোগের সময়সীমা বেড়ে ৩১ মার্চ, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের]
রাষ্ট্রপতি হওয়ার কারণে সক্রিয় রাজনীতিতে আর নেই প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ায় কি সোনিয়াও সেই পথে হাঁটবেন? এমন প্রশ্ন কয়েক দিন ধরে ঘুরছে রাজনীতির আনাচ-কানাচে। সেই জল্পনার মধ্যে শুক্রবার সোনিয়া গান্ধী আচমকা জানান, রাজনীতি থেকে তিনি একেবারে সরে দাঁড়াচ্ছেন। রাহুল সরকারিভাবে কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার কয়েক দিন পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন রাজীবপত্নী। রাহুল সভাপতি হওয়ার পর তাঁর কি ভূমিকা? এমন প্রশ্নে সোনিয়ার এই উত্তর চমকে দেয় গোটা দেশকে। তবে এই নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে দ্রুত ব্যাখ্যা দিতে নামে কংগ্রেস নেতৃত্ব। জানিয়ে দেয় রাজনীতি থেকে অবসরের কোনও পরিকল্পনা নেই একদা দলের সভানেত্রীর। তিনি কংগ্রেসে মার্গদর্শকের কাজ করবেন। গত ৯ ডিসেম্বর সোনিয়া ৭১ বছরে পা দেন। টানা ১৯ বছর কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব থাকার পর কিছু দিন আগে আগে তিনি সরে দাঁড়ান। রাহুল যে পরবর্তী সভাপতি হতে চলেছেন তা অনেক দিনই পরিষ্কার ছিল। তবে এক লাফে নয়, ধাপে ধাপে রাহুলকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন সোনিয়া।
[বিজেপি ছাড়ছে শিব সেনা, স্পষ্ট বার্তা উদ্ধব পুত্রের]
প্রায় ২ দশক দাপট দেখালেও এক সময় রাজনীতিতে নিয়ে কোনও আগ্রহ ছিল না সোনিয়া গান্ধীর। ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধী খুন হওয়ার পর সোনিয়া দলের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর ১৯৯৬ সালে কংগ্রেস ক্ষমতাচ্যুত হয়। দলের সভাপতি সীতারাম কেশরির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন মাধবরাও সিন্ধিয়া, রাজেশ পাইলট, অর্জুন সিং, পি চিদম্বরমের মতো প্রথম সারির নেতারা। এরপর তাদের জোরাজুরিতে ১৯৯৭ সালে কলকাতায় কংগ্রেসের প্লেনামে সোনিয়া দলের প্রাথমিক সদস্যপদ নেন। এর পরের বছর তিনি কেশরিকে হারিয়ে জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী নির্বাচিত হন। সেই সময় কংগ্রেসের হাতে ছিল ১৪১ জন সাংসদ। সোনিয়া দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মধ্যে বেকায়দায় পড়েন। বিদেশিনীর অভিযোগ তুলে বিদ্রোহ করেন শরদ পাওয়ার, পি এ সাংমা এবং তারিক আনোয়ার। সব ঝড় ঝাপটা সামলে সোনিয়ার নেতৃত্বে ২০০৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফেরে কংগ্রেস। পাঁচ বছর পর আরও ভাল ফল। তবে ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ধরাশায়ী হয়। যার পুরো দায় নিয়েছিলেন সোনিয়া। শেষ পর্যন্ত তিনি সরে গেলে দেশের বিরোধী রাজনীতিতে শূন্যতা তৈরি হত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সংসদ শুরু হতেই সরকারকে চেপে ধরেছে কংগ্রেস। এই অবস্থায় সোনিয়ার এই মন্তব্য, হাত চিহ্নের কর্মীরা মুষড়ে পড়তেন বলে অনেকের মত।
The post এবার বিদায়ের সময়, রাহুলের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে ঘোষণা সোনিয়ার appeared first on Sangbad Pratidin.