সুকুমার সরকার, ঢাকা: বার্মিজ ফৌজের অভিযান থাকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। কিছুতেই তাঁদের ফেরত নিচ্ছে না মায়ানমার। উলটে বাংলাদেশের মাটিতেই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি রয়েছে বলে অভিযোগ করছে পড়শি দেশটি।
মায়ানমারের (Myanmar) বিদেশমন্ত্রকের ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিদেশমন্ত্রকের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ও প্রশিক্ষণ বিভাগের মহাপরিচালক জ ফিও উইন গত সোমবার সকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উইন বলেন, “জঙ্গি সংগঠন আরাকান আর্মি ও আরসা মায়ানমারের সীমান্ত চৌকিতে হামলা চালিয়েছে। তাদের ছোঁড়া গোলা বাংলাদেশে গিয়ে পড়েছে।” মায়ানমারের আধিকারিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে গত ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশকে দেওয়া তথ্যের বিষয়ে উল্লেখ করেন। সেদিন মায়ানমার বাংলাদেশকে কূটনৈতিক চ্যানেলে জানিয়েছিল, আরাকান আর্মি ও আরসার সদস্যদের ঘাঁটি ও পরিখা আছে বাংলাদেশে। সেগুসি ধ্বংস করতে তিনি মায়ানমারের তরফে ফের আবেদন জানান। গত সোমবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও দিয়েছে মায়ানমার।
[আরও পড়ুন: পুজোর আগে ফের পদ্মার ইলিশের আগমন, ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ মাছ পাঠাল ঢাকা]
এদিকে, সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। গতকাল ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে সীমান্ত পরিস্থিতি তুলে ধরেছে ঢাকা। তারপর বাংলাদেশার ভারপ্রাপ্ত বিদেশসচিব খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “মায়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে, প্রাণহানি ঘটছে। আমরা মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, মায়ানমার থেকে কোনও গোলা যেন বাংলাদেশে না পড়ে। তিনি আরও বলেন, “এটা মায়ানমারের নতুন কথা নয়। তারা প্রথম থেকেই এই ধরনের কথা বলে আসছে। কিন্তু আমরা দৃঢ়ভাবে বলেছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নীতি হচ্ছে সন্ত্রাসকে কোনও ধরনের ছাড় না দেওয়া। আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি। কাউকেই স্থান দিয়ে মায়ানমারকে অস্থিতিশীল করার অভিপ্রায় বাংলাদেশের কোনও দিন ছিল না। এখনও নেই। ভবিষ্যতেও থাকবে না।”
উল্লেখ্য, মায়ানমারে সরকারি বাহিনী ও রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান সালভেশন আর্মি’র মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। আর সেই সংঘাতের আঁচ পড়ছে বাংলাদেশে। একাধিকবার সীমান্তের ওপার থেকে গোলা এসে পড়েছে এপারে। কিন্তু পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এখনই সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করতে চাইছে না ঢাকা।