সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন অরুণ গোয়েলের ইস্তফার পর কেটে গিয়েছে আস্ত একটি দিন। কিন্তু কেন হঠাৎ করে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার মাত্র কয়েকদিন আগে পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘স্নেহভাজন’ কমিশনার, সেই উত্তর এখনও মেলেনি। যদিও দিনভর রাজধানী জুড়ে চলছে জল্পনা। তার নির্যাস, সদ্য অবসর নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গাপাধ্যায়ের পর এবার ভোটযুদ্ধে নামতে পারেন অরুণ গোয়েলও। এভাবে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ব্যক্তিদের গেরুয়া পতাকা তুলে নেওয়ার জেরে দেশের সাংবিধানিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিরোধী দলগুলি। আবার কোনও কোনও সূত্রের দাবি, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের (Chief Election Commissioner Rajiv Kumar) সঙ্গে মতভেদের কারণে গোয়েল ইস্তফা দিয়েছেন। বাংলায় যেভাবে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে ভোট পরিচালনা করতে চাইছেন রাজীব, তাতে তিনি সম্মত ছিলেন না।
২০২২ সালে কেন্দ্রীয় শিল্পসচিব পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেওয়ার পর রাতারাতি অরুণ গোয়েলকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, তিনি যখন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব ছিলেন, সেই সময় দেশজুড়ে আজাদি কা অমৃৎ মহোৎসব পালনে তাঁর একের পর এক পরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রীর নেক নজরে আসেন অরুণ। এরপর প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই নাকি আচমকা স্বেচ্ছাবসর নিয়ে নেন অরুণ। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে
নতুন দায়িত্বে নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি কমিশনের ফুল বেঞ্চ যখন কলকাতা সফরে এসেছিল, সেই সময় তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না।
[আরও পড়ুন: আচমকা তৃণমূলের পদ থেকে ইস্তফা সায়ন্তিকার, লোকসভায় টিকিট না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত?]
তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের মতানৈক্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তারপরই অরুণের পদত্যাগ তুলে দিয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন। এদিন কংগ্রেসের তরফে তিনটি প্রশ্ন তোলা হয়। যেখানে জানতে চাওয়া হয়, ১) বিভিন্ন স্বতন্ত্র সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে মোদি সরকার। সত্যিই কি সরকার বা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে পদত্যাগ করলেন অরুণ গোয়েল? ২) নাকি ব্যক্তিগত কারণে এই পদত্যাগ? ৩) নাকি কয়েকদিন আগে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির মতো তিনিও বিজেপির হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে এই পদত্যাগ?
[আরও পড়ুন: দাম্পত্যে ছেদ টেনে রাজনৈতিক লড়াইয়ে মুখোমুখি, বিষ্ণুপুরে সৌমিত্রর বিরুদ্ধে প্রার্থী সুজাতা]
সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে ইস্তফার কারণ হিসাবে ব্যক্তিগত কারণের উল্লেখ করেছেন অরুণ। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি শারীরিক কারণে পদত্যাগ করলেন তিনি? যদিও কমিশন মারফত জানা গিয়েছে, অরুণের কোনও অসুস্থতা ছিল না। এখন দেখার শুধু অরুণের পদত্যাগকে ঘিরে ওঠা এই প্রশ্নমালার আসল উত্তর কবে ও কী পাওয়া যায়।