ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: নবান্ন (Nabanna) অভিযানে বাম ছাত্র-যুবদের উপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ। প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা বাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছে বামপন্থীরা (Left front)। বন্ধ ব্যর্থ করতে নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য। অর্থ দপ্তরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আগামিকাল সমস্ত সরকারি কর্মীদের কাজে যোগ দিতেই হবে। অন্যথায় কাটা হবে একদিনের বেতন।
শূন্যপদ পূরণ, সকলের জন্য খাদ্য, শিক্ষা-সহ একাধিক দাবিতে বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযান করে বামপন্থী ছাত্র ও যুব সংগঠন। অভিযানের শুরুতেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশের কড়া নজরদারি এড়িয়ে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতেই আচমকা একেবারে নবান্নের সামনে চলে আসেন সিপিএম বিধায়ক তথা বাম ছাত্র নেতা ইব্রাহিম আলি। সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন। তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়ে তাঁদের আটকায়। ইব্রাহিম-সহ ৫ জনকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশের ভ্যানে তোলা হয়। তখনও উঁচু গলায় স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা। ওঠে ‘খেলা হবে’ স্লোগানও।
[আরও পড়ুন: স্বস্তিতে বিজেপি, পরিবর্তন যাত্রায় নিধেষাজ্ঞার আরজি খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট]
এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অশান্তি বাড়তে থাকে। বিভিন্ন দিক থেকে নবান্নমুখী মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ধর্মতলা চত্বর। প্রায় চার হাজার সদস্য নবান্নের দিকে এগোতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চান বাম ছাত্র-যুবরা। প্রথমে জলকামান, টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে তাঁদের রোখার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তাতেও আন্দোলনকারীরা দমে যাননি। এরপর পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ করলে অনেকে আহত হন, অসুস্থ হয়ে পড়েন কেউ কেউ। গুরুতর জখমদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও, তা অমান্য করে সিধু-কানু-ডহরে ঢুকে পড়েন কয়েকজন ছাত্র ও যুব। আন্দোলনকারীদের শক্তি দেখে কার্যত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে পুলিশও। পরে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। পুলিশের এই নির্মম আচরণের প্রতিবাদে বামেদের তরফে আগামিকাল সকাল ৬ টা থেকে সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত অর্থাৎ ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দিয়েছে বামেরা। তাঁদের সমর্থন করেছে কংগ্রেস। এরপরই সরকারি কর্মীদের জন্য নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য।