চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: বিজেপি ছাড়ছেন নন্দীগ্রামের (Nandigram) বিজেপি নেতা প্রলয় পাল! শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর করা পোস্ট ঘিরে এমনই জল্পনা। এদিন তাঁকে ফোন করা হলেও একই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের রেকর্ডিং ভাইরাল হওয়ার সুবাদে রাজ্য রাজনীতিতে তিনি পরিচিত নাম. এহেন নেতার এমন ঘোষণায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
কিন্তু কেন গেরুয়া শিবির ছাড়তে চান প্রলয়? আসলে বৃহস্পতিবার বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার নতুন জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। ৯১ জন সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটিতে পদাধিকারী রয়েছেন ২৩ জন। সেই ২৩ জনের মধ্যে ৮ জন সহ-সভাপতি, ৪ জন সাধারণ সম্পাদক ও ১০ জন সম্পাদক রয়েছেন। তালিকায় ক্রম অনুযায়ী ৫ নম্বরে প্রলয় পালের (Proloy Pal) নাম রয়েছে। তাঁর ঠিক পরেই রয়েছে পবিত্র করের নাম। তাঁর বিরুদ্ধেই মূলত সরব হয়েছেন প্রলয়। তাছাড়া নতুন কমিটির বেশ কয়েকজন পদাধিকারীর বিরুদ্ধে তাঁর অসন্তোষ রয়েছে। সব মিলিয়ে বিজেপির ‘আদি’ বনাম ‘নব্য’ বিবাদের বিষয়টিই যেন উঠে আসছে।
[আরও পড়ুন: কৃষকদের নয়া ‘উপহার’ বিজ্ঞানীদের, আসছে ই-ট্রাক্টর, একবার চার্জ দিলে চলবে ৪ ঘণ্টা]
এদিন তিনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে জানিয়েছেন, ”যারা এক সময় তৃণমূলে থেকে দুর্নীতিতে হাত পাকিয়েছে, তেমন কয়েকজন জায়গায় পেয়েছেন এই কমিটিতে। পবিত্র কর যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন হিজলি টাইডাল ক্যানেলের মাটি চুরি করে বিক্রি করেছিলেন। খবর হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে । আজ তিনি কমিটির সহ-সভাপতি। ভাবতে লজ্জা লাগে। যাঁরা তৃণমূল থেকে এসেছেন তাঁদের বেশ কয়েকজন এমন জায়গা পেয়ে গিয়েছেন। নতুনরাই দল চালান। আমাদের মতো লোকজন জায়গা না ছাড়লে ওঁরা আবার জায়গা পাবেন কী করে । শনিবার পদত্যাগপত্র জমা দেব জেলা সভাপতির কাছে।” কিন্তু বিজেপি (BJP) ছাড়লে তিনি কি ফিরবেন ঘাসফুল শিবিরে? এর উত্তরে অবশ্য প্রলয় জানাচ্ছেন, ”এখনই এবিষয়ে কিছু জানাবার সময় আসেনি। পরে বলব। প্রয়োজনে রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেব।”
জীবনের প্রথম পর্বে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা হিসেবে কাজ করেছেন প্রলয় পাল। ২০১৩ সালে তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর হঠাৎ বিদ্রোহী হয়ে ওঠার যথার্থ কারণ ঠাহর করতে পারছেন না বিজেপির তমলুক জেলা সাংগঠনিক সভাপতি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। প্রলয় পালের পদত্যাগ করবার কথা শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ”দলে অনেকেই আসবে । দলের প্রসার ঘটাতে গেলে সব ধরনের লোক দরকার আছে। উনি পদত্যাগপত্র জমা দিলে তারপর ভেবে দেখব কী হবে না হবে।
[আরও পড়ুন: সনাতন ধর্ম নিয়ে মন্তব্যের জের! উদয়নিধিকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট]
এদিকে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বাপাদিত্য গর্গ জানিয়েছেন, ”যাঁরা সভ্য,ভদ্র,মার্জিত তাঁরা বিজেপিতে থাকতে পারেন না। প্রলয় পাল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সঠিক সিদ্ধান্ত । দেরিতে হলেও ওঁর বোধোদয় হয়েছে। এর পেছনে আদি-নব্য বিজেপির লড়াই রয়েছে।”