সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নারদ মামলায় (Narada case) এগিয়ে গিয়েও পিছু হঠল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিল নিজেরাই। মঙ্গলবার দুপুরে শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু হতেই কঠিন কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়েন সিবিআই আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। অনেক প্রশ্নের যুক্তিপূর্ণ উত্তর দিতে না পেরে কিছুক্ষণ পর তিনি জানিয়ে দেন, সুপ্রিম কোর্ট থেকে মামলাটি প্রত্যাহার করতে চান। আইনজ্ঞ মহলের একাংশের মত, বিচারপতিদের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে না পারায় মুখ পুড়েছে সিবিআইয়ের। তার জেরেই মামলা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত। এর জেরে নারদ মামলার যাবতীয় শুনানি এখন হবে কলকাতা হাই কোর্টে।
এর আগে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত ৪ হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীর জামিনের শুনানির জন্য তৈরি হয়েছিল ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। এই বেঞ্চ গঠনের বিরোধিতা করেই সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। রবিবার মাঝরাতে অনলাইনে এই আবেদন জানানো হয় শীর্ষ আদালতে। কিন্তু আবেদনে একডজন ত্রুটি থাকায় তা গৃহীত হয়নি। পরে ফের নতুন করে আবেদন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মঙ্গলবার তারই শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি – আর বি গভাই এবং বিনীত শরণের বেঞ্চে। তাতেই বেশ কয়েকটি প্রশ্নের মুখে পড়েন সিবিআই আইনজীবী তুষার মেহতা। তারপরই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত। সিবিআই জানায়, নারদ মামলা তারা কলকাতা হাই কোর্টেই চালাতে চায়।
[আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু হলেও আজীবন বেতন পাবে কর্মীর পরিবার! মানবিক সিদ্ধান্ত টাটা স্টিলের]
সূত্রের খবর, বিচারপতি আর বি গভাই সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান, নারদ মামলায় চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের গৃহবন্দির নির্দেশের বিরোধিতা কেন করা হচ্ছে? তাতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তাঁরা প্রভাবশালী, গৃহবন্দি বা অন্তর্বর্তী জামিন হলে তথ্য লোপাটের আশঙ্কা থাকে। তুষার মেহতা এও জানান, তাঁদের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে কীভাবে সেদিন নিজাম প্যালেসে ৬ ঘণ্টা ‘ধরনা’ দিয়েছিলেন এবং তাঁর সেই ভূমিকা কতটা অসমর্থনযোগ্য, তাও উল্লেখ করেন। তাতে বিচারপতিদের জিজ্ঞাস্য, মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার দায় কেন ধৃতদের উপর চাপানো হচ্ছে। হাই কোর্টে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনে আপত্তিই বা কোথায়? এই প্রশ্নও করেন বিচারপতিরা। অস্পষ্ট উত্তর শুনে তাঁরা জানতে চান, সিবিআই ঠিক কী চায়, তা যেন ভেবেচিন্তে বলা হয়।
[আরও পড়ুন: গোমাংস খাওয়া বন্ধ হতে পারে অসমে! গোহত্যা বিরোধী আইন আনতে চান মুখ্যমন্ত্রী]
এরপরই বিচারপতিদের কাছ থেকে কিছুক্ষণ সময় চেয়ে নেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তারপর তিনি জানান, মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন, কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চেই তা চালাতে চান। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নারদ মামলার তদন্তে নিজেরাই অনেকটা পিছু হঠল সিবিআই, এমনই মনে করছে আইনজ্ঞ মহল।