বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের ফল সামনে আসার পর হতাশ নেতৃত্বের মনোবল বাড়াতে ময়দানে নামতে হলো স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। হতাশ হলে চলবে না। বরং ভবিষ্যতের কথা ভেবে আরও পরিশ্রম করতে হবে। বৃহস্পতিবার দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকর পর দিল্লির সদর দপ্তরে কর্মীদের উদ্দেশে বললেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে অবশ্য সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে দলে রদবদলের ইঙ্গিত দেন তিনি।
৪০০ আসন দূরঅস্ত। তিনশো থেকেও অনেক দূরে থামতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে। এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলেনি। তাই শরিকদের জুটিয়ে এনডি (NTA) জোট সরকার গড়তে হয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi)। কিন্তু সরকার গঠনের পর দলের কোনও সাংগঠনিক বৈঠকে থাকতে পারেননি মোদি। এর মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের গেরুয়া শিবিরের অন্দরে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। চাপে যোগী সরকার। এই পরিস্থিতিতে দলের নেতা কর্মীদের মনোবল ফেরাতে ময়দানে নামলেন তিনি। দলের এহেন ফলাফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে তিনমাস ধরে দিল্লির সদর কার্যালয়ে কর্মরত নেতা-কর্মীদের মনোবলে। এদিন প্রথমে নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর কর্মরত কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁদের মতামত শোনেন। অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর সামনে তাঁদের হতাশা গোপন করেননি বলে সূত্রের খবর। কর্মীদের হতাশা কাটাতে তিনি কার্যত ‘ভোকাল টনিক’ দেন।
[আরও পড়ুন: কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ, অব্যাহত রক্তক্ষরণ, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২!]
জানা গিয়েছে, মোদি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “৪০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দল ভোটে ঝাপিয়েছিল। যাতে যেসব রাজ্যে দলের অস্তিত্ব নেই সেখানেও ভোটারদের মনে প্রভাব পড়ে। অনেকক্ষেত্রেই দল সফল হয়েছে। যেমন দক্ষিণ ভারতে দলের ফলাফল আগের থেকে অনেক বেড়েছে। উত্তর ও পূর্ব ভারতে কয়েকটি রাজ্যে ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। কেন এমন হলো দল পর্যালোচনা করছে। আমার বিশ্বাস আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারব।” সূত্রের খবর, মোদি জানান, আপনাদের আন্তরিক পরিশ্রমের জন্যই তা সম্ভব হয়েছে। আমি জানি, আপনারা ভোটের তিনমাস আগে থেকেই দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। তিনি জানান, যে ভোট হয়ে গিয়েছে তা মন থেকে মুছে আগামী দিনের দিকে তাকিয়ে নিরন্তর কাজ করে যেতে হবে। কারণ সামনেই জম্মু ও কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও দিল্লির মতো রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। সবকটি রাজ্যই আমরা দখল করবো। আপনাদের পরিশ্রমের জন্যই তা সম্ভব হবে। আপনাদের ওপর আমার পুরো ভরসা ও বিশ্বাস আছে।
[আরও পড়ুন: গম্ভীর নন, আগরকরের ইচ্ছাতেই টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্য? দল ঘোষণার পরে জোর চর্চা]
চলতি বছরে শেষে ও নতুন বছরের শুরুতে এমন বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভোট রয়েছে যেখানে দলের ফল খারাপ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র বা হরিয়ানার মতো রাজ্য যেখানে ইন্ডিয়া জোট অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। এছাড়াও নতুন বছরের শুরুতে হবে দিল্লি বিধানসভার ভোট। দিল্লিতে যদিও সাতে সাত পেয়েছে বিজেপি (BJP)। কিন্তু ১৯ সালেও সবকটি আসন বিজেপি পেলেও সরকার পায় আম আদমি পার্টি (Aam Aadmy Party)। লোকসভার পর মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা বা দিল্লির মতো রাজ্যে জয় না পেলে দল ও সরকারের মুখ পুড়বে। তাই প্রথমেই দলের শীর্ষনেতৃত্ব ও কর্মীদের মনোবল বাড়াতে ময়দানে নামতে হলো নরেন্দ্র মোদিকে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।