রমেন দাস: কসবার স্কুলে ছাত্রমৃত্যুতে ঘটনায় সিআইডি (CID) তদন্তের দাবি। পথে নেমে ছেলের জন্য সুবিচারের দাবিতে সরব মৃত ছাত্রের মা। একইসঙ্গে পথে নেমে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে অন্য অভিভাবক এবং প্রতিবেশীরা। তাঁদের অভিযোগ, “স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ বলছে, সবে তো একজন গিয়েছে, এরকম আরও অনেকে যাবে।”
সোমবার বিকেলে কসবার বেসরকারি স্কুলের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় দশম শ্রেণির পড়ুয়ার। অভিযোগ, প্রজেক্ট জমা দিতে না পারায় মানসিকভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছিল স্কুলের তরফে। টিসি দেওয়ার হুমকিও নাকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপরই ৫ তলাক ছাদ থেকে আছড়ে পড়ে পড়ুয়ার দেহ। অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে পুলিশ জেনেছে, ছেলেটির বায়োলজি প্রজেক্ট বাতিল করে দিয়েছিলেন শিক্ষিকা। স্কুলের চারতলায় ক্লাস ছিল ছেলেটির। পাঁচতলায় ছাদ লাগোয়া ঘরে সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকারা বসেন। সেখানেই প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলার জন্য ছেলেটি যায়। সে ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলতে থাকে। কয়েকজন শিক্ষিকার কাছ থেকেও পুলিশ জেনেছে যে, প্রজেক্ট নিয়ে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে ছেলেটি। তাকে ওই শিক্ষিকা বলেন, এর জন্য শাস্তি পেতে হবে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের নির্দেশ শুনলে আর্থিক অবরোধ! উপাচার্যদের বেতন বন্ধ, ‘হুঁশিয়ারি’ মুখ্যমন্ত্রীর]
ওই শিক্ষিকাই তাকে নির্দেশ দেন, টিচার্স রুমের পাশে একাদশ শ্রেণির সামনেই তাকে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে। সেই নির্দেশ মেনে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কান ধরে দাঁড়িয়ে ছিল সে। ওই সময় বেশ কয়েকজন ছাত্র ও ছাত্রী তার সামনে দিয়ে যাতায়াত করে। পুলিশের ধারণা, এর ফলে অপমানিত বোধ করে ছাত্রটি। এর পরই সে ওই ক্লাসের সামনে থেকে সরে আসে। তাকে ছাদে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছিল। যদিও সবাই জানতেন না যে, সে শাস্তি পেয়েছে। সেই কারণে কেউ তাকে ছাদে ঘুরতে বারণও করেননি।
পরিবারের অভিযোগ, স্কুলের তরফে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। পুলিশও তদন্ত করতে দেরি করছে। তাই সিআইডি তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন পড়ুয়ার মা। এদিকে স্কুলে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “বাচ্চাটি ভীষণ অবসাদগ্রস্ত ছিল। ও মাকে ছাড়া ছিল, আগে জানলে কথা বলতাম।” এদিকে ফরেনসিক টিম পৌঁছে গিয়েছে স্কুলে। ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয়।