ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কে কবে বসবেন তার রুটিন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সত্যি নিয়ম মেনে কতজন আসছেন, তা দেখতে এবার হাজিরা খাতা চালু হল তৃণমূল ভবনে। তৃণমূল ভবনের ইতিহাসে যা প্রথম। সূত্রের খবর, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Mamata Banerjee) এই নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন। গত ৫ জুন থেকে শুরু হয়েছে সেই ‘অফিস বিয়ারার’ খাতায় সই।
ঠিক এক মাস আগেই প্রথম দলের রাজ্য কমিটির বৈঠক হয় নতুন তৃণমূল ভবনে। তার পরপরই দলীয় নেতৃত্বের কে কবে ভবনে বসবেন, তার রুটিন তৈরি করে দেওয়া হয়। একেবারে নিয়ম মেনে তারপর থেকেই বসতে শুরু করেন দলের সাংসদ, বিধায়ক থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী, দিনক্ষণ ধরে বসছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, অরূপ রায়রাও। এই পর্বেই একটি নতুন প্রবণতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে দল। একাংশের বক্তব্য, বিধায়ক থেকে শাখা সংগঠনের নেতাদের দেখা যাচ্ছে যাঁরা আসছেন এবং বৈঠক করছেন, তাঁদের সেসব ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করতেও দেখা যাচ্ছে। তাতে আপত্তির প্রশ্ন নেই। কিন্তু সত্যিই তাঁরা রোজ নিয়ম মেনে আসছেন কিনা, সেটাও দেখা দরকার। সেই কারণেই এই নতুন নিয়ম।
[আরও পড়ুন: মরণ হোক একসাথে! দাম্পত্য কলহে স্বামীর গায়ে আগুন লাগিয়ে তাঁকেই জড়িয়ে ধরলেন নদিয়ার বধূ]
এমনকী, এই নিয়মের ব্যতিক্রম রাজ্য সভাপতি বা মহাসচিবের ক্ষেত্রেও হচ্ছে না। প্রতি সোম, বুধ, শুক্র ও শনিবার বসছেন সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা। শনিবার বসছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁরাও সই করে বেরচ্ছেন হাজিরা খাতায়। অন্যদিকে, তৃণমূল ভবনে এই মুহূর্তে নেতাদের কেন্দ্র করে বেশ ভিড়ও লেগে থাকছে। সবথেকে বেশি ভিড় হয় শনিবার বিকেলে ফিরহাদ হাকিম আসলে। অরূপ রায় আসলেও তাঁর সঙ্গে হাওড়া থেকে দলের বহু কর্মী ও সমর্থক দেখা করতে আসেন। নিয়মমতো তাঁদের সঙ্গে দেখা করে এলাকার সমস্যা মিটিয়ে তবে ছুটি। এর মধ্যে বারকয়েক এসেছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া অর্জুন সিংও। তবে তাঁকে আপাতত এই রুটিনের বাইরেই রাখা হয়েছে।
সূত্রের খবর, হাজিরা খাতা চালু হওয়ার পর থেকে হাজিরা নিয়ে তৎপরতাও বেড়েছে নেতৃত্বের মধ্যে। এখনও পর্যন্ত প্রাক্তন সাংসদ মণীশ গুপ্ত ও মন্ত্রী শশী পাঁজার হাজিরায় ক’দিনের জন্য ফাঁক পড়েছে মাত্র। জানা গিয়েছে, মণীশবাবু কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর মন্ত্রীর অনুপস্থিতি শারীরিক অসুস্থতার কারণে। এছাড়া প্রত্যেকে নিয়মিত। উত্তর ২৪ পরগনার এক বিধায়কের ভবনে নিয়মিত বসার কথা। তাঁর বক্তব্য, “এমন নিয়ম তো স্বাস্থ্যকর। নিয়মিত ভবনে বসে বৈঠকের ফলে কর্মীদের সঙ্গে সংযোগ আরও বেড়েছে। পাশাপাশি এলাকার নানা সমস্যার অনেকটা সমাধান করে ফেলা সম্ভব হচ্ছে। আর হাজিরা খাতায় সই এই পর্বেরই একটা অঙ্গ। এতে নিজের তৎপরতাও থাকবে।” রাজ্যস্তরের এক নেতা বলছেন, “এটা স্রেফ একটা নিয়মানুবর্তিতা। যাঁদের বসতে বলা হয়েছে, তাঁরা তো বসছেন। বৈঠকও করছেন। কিন্তু তাঁদের শ্রমজীবী মনোভাব যাতে বজায় থাকে, সেই কারণেই এই সামান্য ব্যবস্থা।”