কৃষ্ণকুমার দাস: লন্ডনের ধাঁচে এবার কলকাতায় ডবল-ডেকার (দোতলা) ইলেকট্রিক চুল্লি চালু করছে কলকাতা পুরসভা। তাও আবার একসঙ্গে দু’জোড়া অর্থাৎ চারটি আধুনিক বৈদ্যুতিক চুল্লি দেহ দাহ করার পরিষেবা শুরু করছে ইএম বাইপাস লাগোয়া ধাপায়। সেখানে থাকবে শ্মশানযাত্রীদের বিশ্রামকক্ষও। এর পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে পশুদের দাহ করার বিশেষ চুল্লিও। গোটা দেশে প্রথম বাংলাতেই এমন চুল্লি তৈরি হচ্ছে বলে জানালেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
শনিবার পুরমন্ত্রী জানান, প্রমোদনগরে ভারতবর্ষের প্রথম পশুদের সৎকারের জন্য চুল্লি তৈরি হয়েছে। অত্যাধুনিক এই চুল্লিতে কম সময়ে পশুদের দেহ দাহ করা যাবে। আগামী মঙ্গলবারই তার শুভ উদ্বোধন করবেন ফিরহাদ। এদিকে, ধাপার মাঠে ডাবল-ডেকার চুল্লির যে দুটি উইং আছে, তার মধ্যে একটি চলতি মাসের শুরুতেই চালু হয়ে যাবে। আর অন্যটির উদ্বোধন হবে আগামী ১০ জানুয়ারি। এতে করোনা রোগীদের দেহ দাহ করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে বলেই মনে করছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ভিডিওগুলো ফাঁস করলে সবাই চমকে যাবে! বিস্ফোরক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়]
শুধু তাই নয়, উত্তর কলকাতার কাশী মিত্র শ্মশানঘাটেও আরও একটি অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক চুল্লিও জানুয়ারি মাসে উদ্বোধন হবে। উত্তর শহরতলিতে শেষকৃত্য করার জন্য কাশী মিত্র শ্মশানঘাটেও ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকায় চতুর্থ চুল্লি চালু হচ্ছে বলে পুরসভার বিদায়ী ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানিয়েছিলেন। পুরসভার স্বাস্থ্যদপ্তরের দাবি, দেশের মধ্যে এই প্রথম শ্মশানে এমন দোতলা বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কলকাতায় পুরসভার পরিচালনায় তিনটি শ্মশানে কোভিডে মৃতের দাহ চলছে। এগুলি হল নিমতলা, ধাপা ও বিরজুনালা। এর মধ্যে ধাপায় অর্ধেকের বেশি কোভিডে মৃতের দেহ প্রতিদিনই দাহ হচ্ছে। কোভিডের পাশাপাশি বেওয়ারিশ লাশ এবং হাসপাতালে পরিজনদের ফেলে যাওয়া দেহও শেষকৃত্য হচ্ছে ধাপার চুল্লিতে। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ধাপায় শেষকৃত্য হলেও পরে বিদায়ী ডেপুটি মেয়রের হস্তক্ষেপে নিমতলায় এই পরিষেবা শুরু হয়। কিন্তু কোভিডের মৃতদেহ বাড়তে থাকায় পুরমন্ত্রী তথা মুখ্যপ্রশাসক দ্রুত আরও দু’টি চুল্লি চালুর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু দাহ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য পরিসরের অভাব থাকায় পুরোপুরি লন্ডনের ধাঁচে বাইপাসের পাশে ধাপাতেই ডবল-ডেকার চুল্লি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। আগে ধাপায় শেষকৃত্যে আসা মৃতের পরিজনদের জন্য কোনও বিশ্রামকক্ষ ছিল না। এবার তা বড় আকারেই থাকছে। এমনকী কোভিডে মৃতের মুখাগ্নি করার পর চিতাভস্ম নেওয়ার জন্য পরিজনদের জন্যও থাকছে অপেক্ষা করার ঘর। পর্যায়ক্রমে ধাপায় এই দোতলা চুল্লিতে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থাও চালু হবে।