নতুন বছর, তার উপর শীতকাল। স্বাদেও কিছু নতুনত্ব আনতে তো মন চায়। আর স্বাদ বদলের জন্য সবচেয়ে ভাল পরীক্ষানিরীক্ষা চলে বোধহয় চিকেনের উপরই। কারণ, রান্নার ধরনের উপর, উপকরণের উপর নির্ভর করে চিকেনের স্বাদ। বাড়িতে রান্না করা ঝোল ঝোল মাংসের পাশাপাশি চিকেনের নানা ফিউশনও তো চেখে দেখেছেন নিশ্চয়ই? এবার আসুন, দেশের অন্যান্য প্রান্তের কিছু ঐতিহ্যশালী চিকেনের পদ শেখা যাক। উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোয় একটু অন্যভাবে রান্না হয় মাংস। তারই দুটো রেসিপি রইল –
কড়াই চিকেন
এটি মূলত উত্তর ভারতের একটি জনপ্রিয় পদ। এই রান্নার একটি বিশেষত্ব, মশলাগুলো মেশানো হয় রান্নার প্রায় শেষভাগে। কেউ কেউ ভাবতে পারেন, এতগুলো টমেটো, তারওপর টকদই দেওয়ার ফলে একটা টক ভাব আসবে রান্নার মধ্যে। কিন্তু আদতে তা হয় না। মশলা এবং কাঁচালঙ্কার ঝাল ভাব টমেটো ও এবং দইয়ের প্রভাবকে কমিয়ে দেয়। ফলে একটা অন্য ধরনের স্বাদ চাখার সুযোগ এনে দেয় কড়াই চিকেন।
উপকরণ:
চিকেন – ৫০০ গ্রাম
টমেটো – ৫টি ( চার ভাগ করে কাটা)
পিঁয়াজ কুচি – হাফ কাপ
ধনে ও জিরেগুঁড়ো – ১ চা চামচ
গরমমশলা – ১ চা চামচ
ড্রাই কসুরি মেথি পাতা – ১ চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ
ধনেপাতা কুচি – ৪ টেবিল চামচ
নুন, চিনি – পরিমাণমতো
তেল – ১০ টেবিল চামচ
আদা বাটা – ১ চা চামচ
গোটা জিরে – ১ টেবিল চামচ
টক দই – ২ বড় চামচ (ভাল করে ফেটিয়ে রাখা)
বড়ো আকারের কাঁচালঙ্কা – চারটি (অর্ধেক করে চিরে নেওয়া)
পদ্ধতি: প্রথমে কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে কাঁচা মাংস দিয়ে দিতে হবে। কড়া আঁচে ভাজতে হবে। মাংসে হালকা বাদামি রং ধরা পর্যন্ত। এরপর মাংসগুলো নামিয়ে নিয়ে আঁচ কমিয়ে ওই তেলে গোটা জিরে ফোড়ন দিতে হবে। হালকা ভাজার পর সুগন্ধ বের হলে তেলে ঢেলে দিন পিঁয়াজ কুচি। তাতে সোনালি রং ধরার পর আদাবাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। মশলা কষার গন্ধ বেরলে ভেজে তুলে রাখা মাংসগুলো ওই তেলের মধ্যে আবার মিশিয়ে দিতে হবে। তাতে টমেটোগুলি মিশিয়ে দিন। পরিমাণমতো নুন আর চিনি দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। হালকা আছে খানিকক্ষণ নেড়েচেড়ে পাত্রটি ঢাকা দিয়ে রেখে দিতে হবে কিছুক্ষণ।
[আরও পড়ুন: সাবধান! অকালে মাথার চুল ঝরে পড়ার কারণ এই রোজকার খাবারগুলি নয়তো?]
এরইমধ্যে টমেটো এবং মাংস থেকে জল বেরিয়ে আসা শুরু হয়ে যাবে। আস্তে আস্তে টমেটোগুলোকে ঘেঁটে দিতে হবে। টমেটোর উপরিভাগে থাকা খোসা কাঁটা চামচ দিয়ে আস্তে করে তুলে নিন। বাকি টমেটো গলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর মশলা ও মাংসের মধ্যে মেশান ধনে, জিরে। খানিকক্ষণ নেড়েচেড়ে দিন গরম মশলা এবং শুকনো কসুরি মেথি (হাতের তালুতে নিয়ে গুঁড়ো করে ছড়িয়ে দিতে হবে)। দেড় থেকে দু’মিনিট কষার পর দই দিয়ে দিন। খেয়াল রাখার বিষয় যে, আঁচ অবশ্যই কমানো থাকবে সেই সময়ে। না হলে দই কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দই মেশানোর পর আবার দেড় মিনিট কষিয়ে কাঁচা ধনেপাতা এবং কাঁচালঙ্কা চেরা তার মধ্যে দিয়ে নেড়েচেড়ে ঢাকা দিয়ে রেখে দিন ৫ থেকে ৬ মিনিট। এরপর পরিবেশন। পরোটা, রুটি, পোলাও বা সাদা ভাতের সঙ্গে চমৎকার মানানসই ডিশ।
দহি-অনিয়ন চিকেন
এটি পাঞ্জাবের লুধিয়ানার অতি জনপ্রিয় এবং ঐতিহ্যশালী একটি পদ। সহজে, খুব দ্রুত রান্না এবং রুটি বা পরোটার সঙ্গে চিকেনের এই পদটি খেতে খুবই পছন্দ করেন সেখানকার বাসিন্দারা। আপনিও শিখে নিন শিখদের হেঁসেলের পদটি।
উপকরণ:
চিকেন – ৫০০ গ্রাম
টকদই – ২৫০ গ্রাম
পিঁয়াজ – ২টি (কুচিয়ে নেওয়া), ২টি ( ডুমো করে কাটা)
সর্ষে, নুন, চিনি, গোটা শুকনো লঙ্কা, গোলমরিচ গুঁড়ো পরিমাণমতো
[আরও পড়ুন: চকোলেট বা আম দিয়ে তৈরি জিভে জল আনা ফিউশন পিঠে, আপনি যাচ্ছেন তো পিঠে উৎসবে?]
পদ্ধতি: কুচনো পিঁয়াজ তেলে বাদামি করে ভেজে নিন। এবার চিকেনটা দই, ভাজা পিঁয়াজ, গোলমরিচ গুঁড়ো, অল্প চিনি দিয়ে মাখিয়ে এক রাত ফ্রিজারে রেখে দিন। এরপর প্যানে সরষের তেল গরম করে সর্ষে আর গোটা শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। তারপর ডুমো করে কাটা পিঁয়াজ ভাজুন। এরপর আঁচ কমিয়ে দই মাখানো চিকেনটা ঢেলে দিন। গোলমরিচ গুঁড়ো বেশি করে দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে নিন। এরপর ঢাকা দিয়ে রাখুন। ওই আঁচেই রান্না হবে। মিনিট ১৫ পর ঢাকা খুলে দেখুন, রান্না হয়ে গিয়েছে। ব্যস, গরমগরম দহি-চিকেন পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন।