সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব নয়। তাই ন’কোচের বহু ট্রেনকে এবার বারো কোচের করা হবে শিয়ালদহে। এজন্য ২, ৩, ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মকে সম্প্রসারিত করা হবে। ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মকে বারো কোচের ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মকে দশ কোচের উপযুক্ত করতে প্ল্যাটফর্মের সামনের দিকের অংশ সম্প্রসারিত হবে। তিনটি প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারিত করা সম্ভব হলেও ১ নম্বরটি অপরিবর্তিত থাকবে। স্টেশন সম্প্রসারণের পাশাপাশি আগামী বছর মাঝামাঝি সময় থেকে বন্ধ করে দেওয়া প্রফুল্ল গেট স্থায়ীভাবে যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ওই জায়গাটি নিয়ে মামলা চললেও তার নিষ্পত্তি হয়েছে সম্প্রতি। ফলে ওই গেট আধুনিকভাবে তৈরি করে খুলতে এবার রেলের কোনওরকম অসুবিধা নেই।
বুধবার পূর্ব রেলের জিএম অরুণ অরোরা শিয়ালদহে যাত্রী পরিষেবায় স্টেশনের নতুন প্রকল্পের পরিকল্পিত স্থান পরিদর্শন করেন। এখন যেখানে মেট্রো স্টেশন সেই ছাদে হবে আধুনিক মানের রেস্তরাঁ। রেলের নিজস্ব অফিসগুলি চলে যাবে দো’তলায়। এখন যেখানে ব্যবসার কেন্দ্রস্থল, সেখানে আরও বাণিজ্যিক স্টল হবে। বর্তমানে যে দ্বিতীয় শ্রেণির ওয়েটিং রুম রয়েছে তা বন্ধ হবে শিগগির।
[আরও পড়ুন: ভাইকে টোপ, ভাতৃবধূর সই ‘জাল’, মানিকের কাণ্ডে হতবাক তদন্তকারীরা]
নতুন ওয়েটিং রুমটি খুলে দেওয়া হবে যাত্রী সাধারণের জন্য। শুধু ট্রেনযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য নয়, নান্দনিক বিষয়টিকে মাথায় রেখে ওই স্টেশনকে সাজানো হবে এবার। স্টেশনের সামনের ফাঁকা জায়গায় এবার দু’টি কোচ বাসানো হবে। তবে সেই কোচ প্রদর্শনের জন্য নয়, তাতে হবে রেস্টুরেন্ট। যাত্রী থেকে অ-যাত্রী প্রত্যেকেই সেই রেস্টুরেন্টে খেতে পারবেন নানা স্বাদের খাবার। ডিআরএম এস পি সিং বলেন, প্রতিটি রেস্টুরেন্ট ইমারতির তৈরি। ফলে ঘরে বসে খাওয়ার থেকে কোচের মধ্যে খাওয়ার তৃপ্তিটাই হবে আলাদা।
এবার বেলেঘাটা খালপাড় দিয়ে স্টেশনে ঢোকা যাবে। এজন্য সেদিকে তৈরি হবে ক্যাবওয়ে। থাকবে বুকিং কাউন্টার ও কারপার্কিং জোন। দূরপাল্লার যাত্রীরাই এই পথ ব্যবহার করতে পারবেন। ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশ দিয়ে এই ক্যাবওয়ে হলে দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের সুবিধা হবে বলে রেল মনে করেছে। স্টেশনের উন্নয়নের পাশাপাশি রেলের আয় বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে এবার। এবার প্রস্রাব করতে গেলেও পকেটের কড়ি গুনতে হবে শিয়ালদহে।
স্টেশনের সামনে কার পার্কিংয়ের পাশে সুবিশাল বিল্ডিং তৈরি হবে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে। যেখানে শৌচাগার, স্নানাগার থেকে নানা প্রসাধনী ব্যবস্থা থাকবে। ‘পে অ্যান্ড ইউজ’ এই শৌচালয়ে প্রস্রাব করতে গেলেও দিতে হবে টাকা। এক কর্তার কথায়, এখন প্রস্রাব করতে গেলে রেল স্টেশনগুলিতে পয়সা লাগে না। এবার থেকে লাগবে টাকা। প্রস্রাব থেকে আয় করতে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের নিঃশুল্ক প্রস্রাবাগারটি একেবারে স্টেশনের পিছনে নিয়ে যাওয়া হবে। যা একেবারে যাত্রীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।