অর্ণব আইচ: বয়ান পালটে স্বীকারোক্তি পঞ্চসায়র গণধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্তর। সোমবারের পর মঙ্গলবার ফের পুনর্গঠনের জন্য নরেন্দ্রপুরের কাঠিপোঁতায় নিয়ে যাওয়া হয় অভিযুক্ত ট্যাক্সিচালক উত্তম রামকে। সেখানেই সে স্বীকার করে যে, যুবতীর উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল সে। তাও নিজের বাড়ির অদূরেই। মানসিক বিপর্যস্ত নির্যাতিতা যে বৃদ্ধাশ্রম বা হোম চিনতে পারছেন না, তা বুঝতে পেরেই উত্তম যুবতীকে নিজের বাড়ির দিকে নিয়ে যায়। কারণ, ওই জায়গাটি যে রাতে নির্জন হয়ে যায়, এলাকার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে তা ভাল করেই জানত ওই চালক। এলাকার একটি ক্লাবে বসানো সিসিটিভি এড়াতেই সে ঘুরপথে ওই নির্জন জায়গায় যায়।
নয়া বয়ানে উত্তম স্বীকার করেছে, সেখানে গাড়ির মধ্যেই যুবতীর উপর সে যৌন নির্যাতন চালায়। কীভাবে যুবতীর উপর নির্যাতন চালিয়েছিল উত্তম, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সোমবার পর্যন্ত উত্তম রাম স্বীকার করেনি যে, সে যুবতীর উপর যৌন নির্যাতন করেছে। বরং ভুল রাস্তা বাতলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল। পুলিশ তা বুঝতে পেরে ফের এদিন উত্তমকে নিয়ে কাঠিপোঁতায় যায়। তার আগে পুলিশ তাকে টানা জেরা করে। সেই জেরার মুখে পড়েই ধীরে ধীরে বক্তব্য পালটাতে থাকে অভিযুক্ত উত্তম। পুলিশের সন্দেহ হয়।
[আরও পড়ুন: আকাশছোঁয়া দাম, ডিসেম্বরের শেষেই মধ্যবিত্তের পাত থেকে উধাও হতে পারে আলু ]
কাঠিপোঁতায় পৌঁছে উত্তম স্বীকার করে যে, খালের ব্রিজের কাছে একটি ক্লাবে সিসিটিভি রয়েছে। সেই সিসিটিভি এড়ানোর জন্য সে অন্য রাস্তায় তার বাড়ির সামনে যায়। সেখান থেকে আরও এগিয়ে একটি ছোট সেতু পেরিয়ে ট্যাক্সিটি একটি নির্জন জায়গায় ঝোপের কাছে দাঁড় করায়। তারপর ট্যাক্সির মধ্যেই সে যুবতীর উপর যৌন নির্যাতন চালায়। ততক্ষণে সে বুঝতে পেরেছে যে, যুবতীর কাছে টাকা নেই। তাই যুবতী বাধা দিতে গেলে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে। তাঁর মুখ ও নাক ফেটে রক্ত বেরিয়ে পোশাকে ভরতি হয়ে যায়। গাড়ির মধ্যেই অত্যাচারের পর সে গাড়িটি নিয়ে এগিয়ে যায়। সেখানে যুবতীকে ঠেলে রাস্তায় ফেলে দিয়ে উত্তম গাড়ি নিয়ে ওই ক্লাবটির কাছে যায়। ব্রিজ পেরিয়ে রাতে বাড়ি ফেরে। পুলিশকে এড়ানোর জন্যই কয়েকদিন বাড়ি থেকে বের হয়নি সে। যুবতীর অত্যাচারের সময় কোনও সঙ্গী ছিল কি না, তা জানতে অভিযুক্তকে টানা জেরা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অন্যদিকে, যুবতীর বক্তব্য অনুযায়ী, দু’জন মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করেছিল। যৌন নির্যাতনের সময় উত্তমের অন্য কোনও সঙ্গী ছিল কি না, পুলিশ সেটাও খতিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যেই গাড়িটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এদিন আদালতে যুবতীর গোপন জবানবন্দি হয়নি। আদালতের নির্দেশ, মানসিক বিপর্যস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে চলতে অভ্যস্ত, এমন একজন ‘স্পেশাল এডুকেডর’-এর সাহায্যে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। পুলিশ আপাতত সেই ‘স্পেশাল এডুকেটর’-এর সন্ধান চালাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: বাহারি হেয়ার স্টাইল! শিক্ষা দিতে ছাত্রদের চুল কাটলেন প্রধান শিক্ষক ]
The post পঞ্চসায়র গণধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়, বয়ান পালটে নির্যাতনের স্বীকারোক্তি অভিযুক্তর appeared first on Sangbad Pratidin.