সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে দ্রুত শিকড় ছড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট। জম্মু-কাশ্মীর ও পশ্চিমবঙ্গ জেহাদি দলটির ‘ট্রানজিট রুট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে গোয়েন্দা মহলে। এহেন পরিস্থিতিতে সোমবার দেশের ৩ রাজ্যের অন্তত পাঁচটি জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ (NIA)।
[আরও পড়ুন: মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত শ্রীলঙ্কা, রাষ্ট্রসংঘে ভোটাভুটির আগে ভারতের ‘সাহায্যপ্রার্থী’ কলম্বো]
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, দিল্লি, কেরল ও কর্ণাটকের অন্তত পাঁচটি জায়গায় সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে এনআইএ। ইসলামিক স্টেট সংক্রান্ত একাধিক মামলায় অভিযান চলছে জাফরাবাদ, কোচি ও বেঙ্গালুরুতে। সব মিলিয়ে মোট পাঁচটি জায়গায় হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এই অভিযানে পাঁচ সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ইয়াকুব নামের এক আইএস জঙ্গিও রয়েছে। সূত্রের খবর, কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির জায়গা নিতে চাইছে আইএস। বাংলাদেশ হয়ে পশ্চিমবঙ্গে জামাত-উল-মুজাহিদিনের হাত ধরে ঢুকে পড়েছে সংগঠনটি। বিশ্লেষকদের সাফ কথা, ইসলামিক স্টেট শুধুমাত্র একটি দল নয়। এটি একটি মতাদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার উদ্দেশ্য গোটা বিশ্বে শরীয়ত আইন লাগু করে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করা। আর এর জন্য ভারতীয় মহাদেশে প্রস্তুতি শুরু করেছে সংগঠনটি।
সাউথ ব্লকের উদ্বেগ বাড়িয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। সেখানে বলা হয়, ভারতে জেহাদের বিষ ছড়াতে তৈরি কুখ্যাত আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট -খোরাসন (ISIL-K)। ভারতীয় উপমহাদেশে এবার সংগঠনটির দায়িত্ব নিয়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী শাহিব-আল-মুহাজির। এমনটাই সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস (António Guterres)। গুতেরেস জানিয়েছেন, ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে শাহিব মুহাজিরের। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সক্রিয় ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আগে যোগাযোগ ছিল তার। বর্তমানে আইএস-কে’র নেতা হয়েই ভারত, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার উপর নজর দিচ্ছে সে।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে হাজার দুয়েক আইএস-কে জঙ্গি রয়েছে। সেখানে তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। যে কোনও সময় তারা ভারত-সহ প্রতিবেশী দেশগুলিতে হামলা চালাতে পারে। জঙ্গি সংগঠনটির শক্তি নিয়ে মহাসচিবের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় জমি খুইয়ে এখন অনেকটাই কোণঠাসা আইএস। তবে এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী সংগঠনটি। তাদের হালকা ভাবে নেওয়া উচিত হবে না। গত মে মাসে কাবুলের হাসপাতালে হামলা, আগস্টে জালালাবাদের কারাগারে হামলা, কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা ও নানগরহার প্রদেশে আফগান সাংবাদিককে খুনের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট -খোরাসন। ফলে সংগঠনটি যে আরও নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতে সক্ষম তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।