সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলম্বোয় যত কাণ্ড সব ওই শেষ ওভারে। মামুদুল্লাহ-র বিশাল ছক্কায় ম্যাচ জিতে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ‘নাগিন ডান্স’ থেকে সাকিব উল হাসানের টিম তুলে নেওয়ার হুমকি! না, বাদ গেল না কিছুই! ম্যাচ শেষে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের দরজার কাচ ভাঙা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, সেলিব্রেশনের জেরেই ওই কাচ ভাঙা হতে পারে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরকে সত্যি মানলে, কে ওই কাচ ভাঙল, তা জানতে গ্রাউন্ড স্টাফদের কাছ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠিয়েছেন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড।
[রোহিতের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শীর্ষে থেকেই সিরিজের ফাইনালে টিম ইন্ডিয়া]
ঘটনার সূত্রপাত শেষ ওভারে আম্পায়ারের নো বল না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকেই। ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের শেষ ওভারে ১২ রান বাকি। শ্রীলঙ্কান পেসার উদানা পরপর দুটো বাউন্সার দিলেন। কোনও নো বল দিলেন না আম্পায়ার। দ্বিতীয় বলে আবার মুস্তাফিজুর রহমান রান আউট। এরপরই প্রবল উত্তেজিত হয়ে পড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। মাঠেও উত্তেজিতভাবে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছেন মামুদুল্লাহ। মিনিট খানেক পর উত্তেজনা আরও বাড়ল, যখন সাকিব সাইড লাইনের বাইরে থেকে ক্রিকেটারদের বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছেন! তাহলে বাংলাদেশে কি ম্যাচটা আর খেলবে না? শেষমেশ অবশ্য সেরকম কিছু হয়নি। সাকিবকে ড্রেসিংরুমে পাঠানো হল। টিম ম্যানেজার ব্যাট করতে পাঠালেন মামুদুল্লাহকে।
পরেরটা আরও রোমাঞ্চের। শুক্রবারের পর যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে লোকগাথা হয়ে থাকবে নিশ্চিতভাবে। জিততে গেলে তখনও ৪ বলে ১২ বাকি। মামুদু্ল্লাহ কভারের উপর দিয়ে বল বাউন্ডারিতে পাঠালেন। ৩ বলে ৮। পরের বলে দুটো রান। তারপর মামুদুল্লাহ-র বিশাল ছয়টাই বাংলাদেশকে সব টেনশন থেকে মুক্তি দিয়ে গেল। আর শেষটাও হল ‘অভিনব’ সেলিব্রশেনে। নাগিন ডান্স। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের কাছে একটা মনে রাখার মতো ম্যাচ হয়ে রইল। তামিম ইকবাল সেটাই বলছিলেন, “ভীষণ ইমোশলান একটা ফিনিশ হল। আমরা দেখছিলাম লেগ আম্পায়ার নো বলের সিগন্যাল দিয়েছেন। তাই আমরা নো বলের আবেদন করছিলাম। কিন্তু কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চাইনি।” অধিনায়ক সাকিব উল হাসান আবার বলে গেলেন, “দিনের শেষে আমরা সবাই বন্ধু। মাঠে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। যাই হোক পরের বার আমাকে আরও সতর্ক হতে হবে।”
অবশ্য ম্যাচটা এতদূর যাওয়ারই কথা ছিল না। শ্রীলঙ্কার ১৬০ তাড়া করতে নেমে একটা সময় মনে হচ্ছিল অনায়াস জয় আসবে। ১৩ ওভারে একশোর কাছাকাছি রান। কিন্তু পরপর কয়েকটা উইকেট চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। সেখান থেকে মামুদুল্লাহর ব্যাটে জয় (১৮ বলে ৪৩)। ম্যাচ শেষে তিনি বললেন, “আমার কেরিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। সাকিব আউট হয়ে যাওয়ার পর একটু চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। তবে বিশ্বাস ছিল ম্যাচটা বের করে নিয়ে আসতে পারব। ঠিক করেছিলাম, যতটা পারব নিজে স্ট্রাইকে থাকব।” রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে সাকিবরা ফাইনালে এবার ভারতের সামনে। গ্রুপে দুটো ম্যাচেই রোহিতদের কাছে হারতে হয়েছে। ফাইনালকে তাই বদলার ম্যাচ হিসাবে দেখছে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশের এই সেলিব্রেশন, বডি ল্যাঙ্গুয়েজকে অনেকেই খুব একটা ভাল চোখে দেখছেন না। তাঁরা বলছেন, ক্রিকেট এখনও জেন্টলম্যানস গেম। শেষ পাওয়া খবরে, ড্রেসিংরুমের কাচ ভাঙার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশেরই এক খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে।
[ম্যাচ গড়াপেটায় যুক্ত ছিলেন শামি? তদন্ত শুরু করল বিসিসিআই]
The post শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে মাঠেই নাগিন ডান্স বাংলাদেশের, ভাঙল ড্রেসিংরুমের কাচ appeared first on Sangbad Pratidin.