সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দফায় দফায় আলোচনার পরও মিলল না সমাধান সূত্র। আসন নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে ওড়িশায় বিজেপি (BJP) ও বিজেডি (BJD) জোট সম্ভাবনা খারিজ হল শুক্রবার। প্রায় দেড় দশক পর জোটের গঠনের জন্য এগলেও শেষ পর্যন্ত আলাদা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দল। শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওড়িশাতে একাই লড়বে তারা।
ওড়িশা বিজেপি সভাপতি মনমোহন শ্যামল এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “ওড়িশাতে (Odisha) ২১ টি লোকসভা কেন্দ্র ও ১৪৭ টি বিধানসভা কেন্দ্রে একাই লড়ব ও জিতব।” প্রসঙ্গত, ওড়িশায় এবার একসঙ্গেই হচ্ছে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট। সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত দু’দলের বোঝাপড়া না হওয়া প্রসঙ্গে সূত্রের খবর, ‘বিজু জনতা দল’ ওড়িশার শাসক দল হওয়া সত্ত্বেও, লোকসভায় অতিরিক্ত আসনে লড়তে চায় বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের এই দাবি কোনওমতেই মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী তথা বিজেডি প্রধান নবীন পট্টনায়েক (Nabin Pattanayak)। ফল স্বরূপ বন্ধ হয়ে যায় জোটের রাস্তা।
[আরও পড়ুন: লাদাখে নিহত সেনা জওয়ানের দেহ ফিরল বাংলায়, চোখের জলের ঘরের ছেলেকে বিদায় পরিবারের]
অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়কাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এনডিএ’র (NDA) সঙ্গে ছিল বিজু জনতা দল। কিন্তু ২০০৮ সালে কন্ধামাল হিংসার ঘটনায় দুই শরিকের সম্পর্কে অবনতি হতে শুরু করে। এই হিংসার পিছনে বিজেপির ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আখ্যা দিয়ে শেষ পর্যন্ত এনডিএ ছাড়ে বিজেডি। এরপর থেকে বিজেপি ও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে ওড়িশার শাসক হিসেবে শক্ত জমি তৈরি করেছে নবীনের দল। অন্যদিকে, তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে বিজেপি।
[আরও পড়ুন: মধ্যাহ্নভোজ রাজনীতি! ভোটের ময়দানে ডিম-ভাত বনাম মাছ-ভাতে লড়াইয়ে সরগরম পুরুলিয়া]
কিন্তু বর্তমান জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে একা থাকার চেয়ে বরং কেন্দ্রে শাসকদলের সঙ্গী হওয়াই শ্রেয়। এমন ভাবনা তৈরি হয় বিজেডিতে। উলটো দিকে বিজেডিকে সঙ্গে নিয়ে ওড়িশায় সাংসদ সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ ছিল বিজেপিরও। ফলে বিহারের মতো ওড়িশাতেও পুরানো শরিকের সঙ্গে পদ্ম শিবিরের গাঁটছড়া বাঁধার সম্ভাবনা গড়ে ওঠে। যদিও সূত্রের খবর , লোকসভায় বেশি আসনের বিনিময়ে বিধানসভায় বিজেডিকে দুই-তৃতীয়াংশ আসন ছাড়ার প্রস্তাব দেয় বিজেপি। তবে সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, বর্তমানে ওড়িশায় বিজেপির ৮ জন সাংসদ এবং বিধায়ক ২৩ জন। সেখানে বিজেডির আসন লোকসভায় ১২ এবং বিধানসভায় ১১২। সেই হিসেবে লোকসভায় ৮ টি এবং বিধানসভায় ৩০ টি আসন বিজেপিকে ছাড়তে রাজি হয়েছিল নবীনের দল। বিজেপিও এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। কিন্তু এ নিয়ে দু’পক্ষের ঐকমত্য হয়নি। এর জেরে শেষ পর্যন্ত ভেস্তেই যায় জোটের সম্ভাবনা।