shono
Advertisement

লকডাউনে কাজ হারিয়ে মাথায় ঋণের বোঝা, সংসার চালাতে কিডনি বেচছেন অসমের গ্রামবাসীরা

একটি গ্রামে অন্তত ১২ জনের খোঁজ মিলেছে যাঁরা কিডনি বিক্রি করেছেন।
Posted: 01:58 PM Jul 15, 2021Updated: 05:46 PM Jul 15, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত দেড় বছর ধরে মানুষের বুকে কত বড় কাঁটা হয়ে রয়েছে অতিমারী (Pandemic), তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সংক্রমণের ধাক্কা তো আছেই। অন্যদিকে লকডাউন‌ের (Lockdown) জেরে রোজগারশূন্য হয়ে পড়াও আরেক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের দুর্ভোগের। দু’বেলা দু’মুঠো জোগাড় করাটাই হয়ে দাঁড়াচ্ছে চ্যালেঞ্জ। পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তার এক চরম উদাহরণ অসমের (Assam) ধরমতুল গ্রাম। ইতিমধ্যেই এই গ্রামে অন্তত ১২ জনের সন্ধান মিলেছে, যাঁরা তাঁদের কিডনি (Kidney) বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন দারিদ্রের ছোবল থেকে বাঁচতে। তাঁদের অসহায়তার সুযোগ নিতে হাজির হয়ে গিয়েছে দালাল চক্রও।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে একজন মহিলাও। জানা যাচ্ছে ওই মহিলা ও তার ছেলে বিভিন্ন পরিবারের কাছে গিয়ে কিডনি বিক্রি করতে উসকানি দিত। পুলিশ দু’জনকেই গ্রেপ্তার করেছে। চক্রের মাথাকেও ধরা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।

[আরও পড়ুন: সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক প্রকল্প বন্ধের দাবিতে মামলা সুপ্রিম কোর্টে, কী জানাল কেন্দ্র?]

৩৭ বছরের সুমন্ত দাস পেশায় রাজমিস্ত্রি। লকডাউনের পর থেকে আর কাজই পাননি সেভাবে। এদিকে তাঁর ছেলের হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র। অপারেশন করাতেই হবে। অন্যদিকে ছোট সংস্থার থেকে নেওয়া ঋণের বোঝাও রয়েছে। অগত্যা ৫ লক্ষ টাকার জন্য নিজের কিডনি বিক্রি করে দেন তিনি। কিন্তু দালালরা তাঁকে দেড় লক্ষ টাকার বেশি দেননি। ওই টাকায় ছেলের অপারেশন হয়নি। এদিকে কিডনি হারিয়ে তিনিও হয়ে গিয়েছেন অশক্ত। জীবনে আর ভারী কাজ করতে পারবেন না।

গুয়াহাটি থেকে ৮৫ কিমি দূরে অবস্থিত এই গ্রামে সুমন্তর মতো হতভাগ্য আরও অন‌েক রয়েছেন। কৃষ্ণা দাস নামে এক মহিলা, যাঁর স্বামী বিশেষ ভাবে সক্ষম, তিনিও একই ভাবে দালালদের টোপে পা দিয়েছেন। কিডনি বেচে সাড়ে চার লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলা হলেও পেয়েছেন মাত্র ১ লক্ষ টাকা। এদিকে মাথার উপরে ঝুলছে ৭০ হাজার টাকা ঋণের বোঝা।

বহু গ্রামবাসীর মতে দারিদ্রের প্রকোপে পড়া অবস্থায় সহজে অর্থ রোজগারের টোপ এড়াতে পারেননি এঁরা। আর তাই কলকাতায় গিয়ে কিডনি বিক্রি করে আসছেন। তবে লকডাউনের আগে থেকেই এই চক্র সক্রিয় ছিল বলে দাবি। পরিস্থিতির সুযোগে যা আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। পুলিশ এই চক্রকে নির্মূল করতে সচেষ্ট হয়েছে। যাঁরা কিডনি দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে দালালদের খোঁজ করা হচ্ছে। এই চক্র কতদূর ছড়িয়ে রয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

এদিকে অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর পুত্র তথা কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ পশ্চিমবঙ্গের  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি লিখে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আরজি জানিয়েছেন। তাঁর চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন এই কিডনি পাচারকারী চক্রের যোগ রয়েছে কলকাতার সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীকে শহরের পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। 

[আরও পড়ুন: Jammu: সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াতের সফরের মাঝেই জম্মুতে ফের ড্রোন আতঙ্ক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement