অর্ণব আইচ: একেই বিমানের সংখ্যা কম। তার উপর মধ্যরাতে চিনের কুনমিং থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় বিমানটি। তাই বহু ব্যবসায়ী ও পর্যটকই আসতে চান না কলকাতায়। চলে যান দিল্লি বা মুম্বইয়ে। সেই কারণে কলকাতা থেকে কুনমিংয়ে বিমানের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে চায় কলকাতার চিনা দূতাবাস।
[ছুটি কাটাতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ মামার বিরুদ্ধে, পাটুলির ঘটনায় ধৃত অভিযুক্ত ]
শনিবার ভারত-চিনের সম্পর্ক ও সহযোগিতা নিয়ে শহরে আলোচনা সভা আয়োজন করে সেন্টার ফর ইস্টার্ন অ্যান্ড নর্থ ইস্টার্ন রিজিওনাল স্টাডিজ, কলকাতা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন চিনা দূতাবাসের প্রতিনিধি, চিন বিশেষজ্ঞ ও প্রাক্তন সেনাকর্তারা। এদিন এই অনুষ্ঠানে কলকাতার চিনা কনসাল জেনারেল ঝা লিইউ জানান, গত বছর ভারত ও চিনের মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে। ভারতের সফটওয়্যার ও চিনের হার্ডওয়্যার দুই-ই সবচেয়ে এগিয়ে। দুই দেশ একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগোলে এই শক্তি অন্যদের থেকে অনেক বেশি হবে। যদিও পরিকাঠামোর দিক থেকে সমস্যা হওয়ায় চিন থেকে অনেক ব্যবসায়ীই এই রাজ্যে লগ্নি করতে আসছেন না।
অনুষ্ঠানে সাংসদ ড. সুব্রহ্মণ্যম স্বামী জানান, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্যও চিনের সাহায্য ভারতের প্রয়োজন। কাঁচামাল ছাড়াও তৈরি করা বিভিন্ন জিনিস ভারত থেকে চিনে রপ্তানি শুরু করতে হবে। চিনও বহু অসম্পূর্ণ বৈদ্যুতিন জিনিস জাপান ও তাইওয়ান থেকে কিনে তা সম্পূর্ণ করে বিক্রি করে। চিন বিশেষজ্ঞরা জানান, চিনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধের পরিস্থিতি নেই। তা সত্ত্বেও সীমান্তের কাছে সামরিকভাবে যথেষ্ট প্রস্তুত রয়েছে চিন।
[নজরে দিল্লি, বাংলার পাশাপাশি অন্য ভাষাতেও প্রকাশ হবে তৃণমূলের ইস্তেহার]
এদিন চিনা কনসাল জেনারেল একটি প্রশ্নের উত্তরে জানান, চিনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং থেকে একটিমাত্র বিমান কলকাতায় এসে পৌঁছয় রাত সাড়ে এগারোটায়। কিন্তু বিমান দেরি করলে রাত দেড়টাও বেজে যায়। অত রাতে ব্যবসায়ীরা আসতে চান না। তাঁরা বলেন, রাতে পৌঁছলে কখন কলকাতার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন? তাঁরা পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েন। অথচ কুনমিং বিমানবন্দরের কর্মীরা চান, কলকাতা হয়েই আরও মালবাহী বিমান ওই বিমানবন্দরে আসুক।
এই রাজ্যের সঙ্গে যাতে ইউনান প্রদেশের যোগাযোগ আরও ভাল হয়, তার জন্য বিমানের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন বলে অভিমত চিনা কনসাল জেনারেলের। তিনি জানান, চিনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে কলকাতা ও কুনমিংয়ের সম্পর্ক আরও ভাল করতে ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ ও ব্যবসায়ীদের বেশি করে কলকাতায় নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে। দুই শহরের মধ্যে সড়কপথে যোগাযোগের ব্যবস্থা হলে, বাণিজ্যও বাড়বে। আবার ভারত ও চিনের মধ্যে মোটর র্যালিও সম্ভব। অবশ্য সেই ক্ষেত্রে ভারত ও চিন ছাড়াও বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সাহায্যের প্রয়োজন। কলকাতা থেকে জিনিসপত্র সড়কপথে চিনে রপ্তানি করলে সেখান থেকে জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়ায় তা পৌঁছনোও সম্ভব। কলকাতায় চিনা ব্যবসায়ীদের তিন মাস অন্তর নতুন ভিসা তৈরি করতে হয়। তার জন্য তাঁদের আবার চিনে যেতে হয়। তাতে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েন। এই পদ্ধতি পালটালে চিনা ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে বলে জানান চিনা কনসাল জেনারেল।
The post কলকাতা-কুনমিং বিমান পরিষেবা সীমিত হওয়ায় বাণিজ্যে প্রভাব, চিন্তিত চিন appeared first on Sangbad Pratidin.