সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ”আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন, আমি ভয় পাচ্ছি কিনা তাহলে বলব, হ্য়াঁ। ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভয় পাওয়ার মতোই।” এভাবেই দেশের এই মুহূর্তের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন নোবেলজয়ী (Nobel) অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সল্টলেকে প্রতীচী ট্রাস্টের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই এমন কথা বলতে শোনা গেল বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদকে। সেই সঙ্গে দেশের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানালেন তিনি। তিনি বলেন, ”ভারত কেবল হিন্দুদের দেশ নয়। আবার কেবল মুসলিমদেরও নয়। সবাইকে একসঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে এখানে।”
[আরও পডুন: শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে বাধ্য হয়েই মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ফড়ণবিস, কটাক্ষ পওয়ারের]
পাশাপাশি অমর্ত্যর কথায়, ”আমি চাই দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকুক। এই দেশ ঐতিহাসিক ভাবেই উদার। এখানে কোনও বিভাজন চাই না।” ওই অনুষ্ঠানে দীর্ঘ সময় বক্তব্য রাখেন তিনি। মনে করিয়ে দেন, বেদের যুগে অঙ্কের পারদর্শিতার কথা। প্রসঙ্গ তোলে অল-বিরুনিদেরও। এই ভাবেই দেশের অতীত গৌরবের কথা তুলে সকলকে একতার বার্তাই দিলেন তিনি।
এদিকে শুক্রবারই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অমর্ত্য সেনের মন্তব্যের সমর্থনে মুখ খুলেছেন। তাঁর কথায়, ”অমর্ত্য সেন ঠিক বলেছেন। বিচার ব্যবস্থা নিয়ে সঠিক কথা বলেছেন। ওনার উপলব্ধির কথা বলেছেন। উনিও ওঁর জায়গা থেকে উপলব্ধি করতে পারছেন প্রত্যেকের নিজস্ব এক্তিয়ার আছে। সংবিধানের পরিকাঠামোয় সে কথা বলা আছে। তবে যেভাবে বিচার ব্যবস্থা সক্রিয় হচ্ছে পরিষদীয় কাজে তাতে আমি অত্যন্ত চিন্তিত। এটা চিন্তার ব্যাপার।”
উল্লেখ্য, পয়গম্বরকে নিয়ে নূপুর শর্মার (Nupur Sharma) মন্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। নানা প্রান্তে বিক্ষোভ, অবরোধ চলে। গত মঙ্গলবার নূপুরকে সমর্থন করে ফেসবুকে পোস্ট করা রাজস্থানের এক ব্যক্তিকে খুন করেছে দুই আততায়ী। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয় দেখাচ্ছে অনেককেই। এর মধ্যেই শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে নূপুরকে। শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ, নূপুর শর্মার দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের জন্যই দেশের এমন পরিস্থিতি। তিনি অনেক দেরিতে ক্ষমা চেয়েছেন। তাঁর উচিত, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া। বিচারপতিদের এও বলতে শোনা যায়, ”যখন কারও বিরুদ্ধে এফআইআর হয়, তাঁদের গ্রেপ্তারির আওতায় আনা হয়। কিন্তু আপনাকে তো কেউ ছুঁতেই পারছে না।”