সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। নামটা এখন এতটাই চেনা যে তিনি যেন পাশের বাড়ির ছেলে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। সাফল্যও তো কম নয়। অমর্ত্য সেনের পর তৃতীয় বিশ্বের দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে রিসার্চ করে নোবেলজয়ী বাঙালি। অর্থনীতি নিঃসন্দেহে তাঁর প্রিয় বিষয়। তবে প্রবাসী হলেও মাছেভাতে এই বাঙালির কিন্তু সিনেমার সঙ্গে এক অন্যরকম সম্পর্ক রয়েছে। আলবাৎ থাকবে! আর থাকবে নাই বা কেন! বাঙালি বলে কথা। আর সেই সিনেমাপ্রীতি থেকেই ইংরেজি ভাষায় ২টি তথ্যচিত্র এবং ভোজপুরি ভাষায় একটি শর্টফিল্মও তৈরি করে ফেলেছেন অভিজিৎ।
“বলেন কী? অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী কি না সিনেমার পরিচালক?” অভিজিতের মধ্যেকার সুপ্ত পরিচালকের কথা শুনে অবাক হয়ে অনেকে এমন মন্তব্যই করেছেন। কলেজে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন রকমের শখ রয়েছে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সিনেমা হলে নতুন ছবি এলেই হল, কলেজের ক্লাস বাদ দিয়ে সিনেমা দেখা, সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করা, লেখালেখি-সহ পড়াশোনার পাশাপাশি আরও অনেক কিছুই করতেন এই নোবেলজয়ী বাঙালি। অভিজিতের সঙ্গে তাঁর বন্ধুদের সিনেমা নিয়ে চর্চার ঠেকটা ছিল রবীন্দ্র সরোবর লেকের কাছে মধুবাবুর চায়ের দোকান।
[আরও পড়ুন: অভিজিৎ ‘অর্ধেক বাঙালি’, আর রবীন্দ্রনাথ? ]
দেশের সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামোর প্রতি আগ্রহ থেকেই ২টি তথ্যচিত্রও তৈরি করে ফেলেছেন অভিজিৎ। ২০০৬ সালে বানালেন ‘দ্য নেম অফ দ্য ডিসিজ’। আর চলতি বছরেই ‘দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট জার্নি: টাইমস অ্যান্ড টেলস অফ ডেমোক্রেসি’ নামে আরও একটি ডকুমেন্টরি তৈরি করে ফেললেন। উল্লেখ্য, চলতি লোকসভা ভোটের সময় ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে তুলে ধরার জন্য কলকাতার খ্যাতনামা সিনেম্যাটোগ্রাফার রানু ঘোষের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন অভিজিৎ। অন্যদিকে, কলকাতার খ্যাতনামা তথ্যচিত্র পরিচালক বাপ্পা সেনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘দ্য নেম অফ দ্য ডিসিজ’ তৈরি করেছিলেন তিনি। সালটা ২০০৪। রাজস্থানের উদয়পুরের কয়েকটা গ্রামে চিকিৎসা বিষয়ক কোনও একটা প্রজেক্টের জন্য গবেষণা চালাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময়েই গ্রামে গ্রামে ঘুরতে ঘুরতে অভিজিতের মনে হয়েছিল একটি তথ্যগুলিকে নিয়ে একটা ডকুমেন্টরি তৈরি করলে মন্দ হয় না! ব্যস! অমনি বানিয়ে ফেললেন ‘দ্য নেম অফ দ্য ডিসিজ’।
তবে ২০০৬ এবং ২০১৯ সালের মাঝে ২০১৩ সালেও কিন্তু একটি শর্টফিল্মও বানিয়েছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, এবার আর ইংরেজি-হিন্দি নয়, একেবারে ভোজপুরি ভাষার। নাম ‘লহু মাংগে লোহা’। ২৩ মিনিটের মশালাদার একটা ছবি। ভোজপুরি নাচ-গান সবই আছে। তবে এই বিনোদনের মোড়কে অভিজিতের উদ্দেশ্য ছিল স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তোলা। আমাদের শরীরে যথাযথ আয়রনের পরিমাণ থাকা অতি আবশ্যক, যাতে রক্তাল্পতা দূর হয়। বিশেষ করে আমাদের দেশের মহিলারা বেশিরভাগই রক্তাল্পতায় ভোগে। আর সেই সম্পর্কিত সচেতনতা বাড়াতেই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তার এক বন্ধুর সঙ্গে তৈরি করে ফেলেছেন ‘লহু মাংগে লোহা’।
দেখে নিন ‘দ্য নেম অফ দ্য ডিসিজ’ ডকুমেন্টরিটি
[আরও পড়ুন: কেরিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংসে পা, এবার অভিনয়ে ইরফান পাঠান]
The post ভোজপুরি ও ইংরাজি ভাষায় সিনেমাও বানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ appeared first on Sangbad Pratidin.