সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে চলছে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ। অন্যদিকে হামাস জঙ্গিদের নিধনে গাজায় তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল। চুপ বসে উত্তর কোরিয়াও। ক্রমাগত শক্তিপ্রদর্শন করে যাচ্ছেন সেদেশের রাষ্ট্রপ্রধান কিম জন উন। তবে এবার আর ক্ষেপণাস্ত্র নয়। মলমূত্র ও আবর্জনায় ভরা বেলুন দিয়েই দক্ষিণ কোরিয়ায় 'হামলা' করছে কিমের দেশ!
সদ্যই যৌথ সামরিক মহড়া শেষ করেছে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া। যা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি উত্তর কোরিয়া। জবাবে একাধিকবার সাগরে মিসাইল ছুঁড়েছে কিমের দেশ। কিন্তু সেসব নাকি পুরনো হয়ে গিয়েছে। এখন 'শত্রু' দেশে আক্রমণ শানাতে মলমূত্র ও আবর্জনায় ভরা বেলুনকেই নয়া হাতিয়ার করেছে পিয়ংইয়ং। বুধবার এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
এদিন সেদেশের সীমান্ত এলাকার আকাশে উড়তে দেখা যায় বহু সাদা বেলুন। সেগুলোতে মাটিতে নেমে আসতেই চোখ কপালে ওঠে সকলের। বেলুনগুলোয় যে প্লাস্টিক লাগানো রয়েছে তা আবর্জনায় ঠাসা। যার মধ্যে রয়েছে মলমূত্রও। সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর কেমিক্যাল অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল টিমকে মোতায়েন করা হয় ওই এলাকায়। তারা সন্দেহজনক বস্তুগুলো সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। পাশাপাশি ওই এলাকার বাসিন্দাদের সাদা বেলুনগুলো থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে 'অত্যন্ত ভয়ংকর' বলে উল্লেখ করেছে সিউল। দাবি করা হয়েছে ওই বেলুনগুলো উত্তর কোরিয়া পাঠিয়েছে।
[আরও পড়ুন: আমেরিকার চাপেও থামছেন না নেতানিয়াহু, রাফার শরণার্থী শিবিরে ইজরায়েলি বোমায় মৃত ২১!]
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার সারাদিনে কমপক্ষে ১৫০টি বেলুন শনাক্ত করা হয়েছে। এদিন, বেলুন ও তার সঙ্গে আসা প্লাস্টিক ব্যাগের ছবি প্রকাশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা। এদিকে, উত্তর কোরিয়ার তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে, সিউল নাকি এর আগে বহুবার তাদের দেশে বেলুন পাঠিয়েছে। যার মধ্যে বিভিন্ন বিদ্বেষী বার্তা দিয়ে লিফলেট লাগানো ছিল। সেগুলোকে গুলি করে নামানো হয়। যদিও এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে কিছু জানায়নি কিমের দেশ। কিন্তু বিশ্লেষকদের ধারণা, বদলা নিতেই দক্ষিণ কোরিয়ায় নোংরা ভর্তি বেলুন পাঠিয়েছে পিয়ংইয়ং। এই ঘটনায় ফের নতুন করে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দুদেশের মধ্যে।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও মিসাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সামরিক মহড়া করেছিল আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া। ১১ দিনের ওই মহড়া শেষ হয় গত ১৪ মার্চ। দুদেশের এই যৌথ মহড়া নিয়েও আগে হুমকি দিয়েছিলেন কিম। সিউলে আঘাত হানার মতো সমস্ত রকম প্রস্তুতি রয়েছে বলে হুমকি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। বলে রাখা ভালো, গত বছরের ডিসেম্বরে শত্রু দেশে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম। তাঁর সাফ বার্তা ছিল, প্রতিপক্ষ যদি পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে তাহলে আক্রমণ শানাতে পিছপা হবে না পিয়ংইয়ং। আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ বাড়িয়ে রেকর্ড হারে অস্ত্রের পরীক্ষা করছেন তিনি।