সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনে একের পর এক সামরিক বিপর্যয়ে রীতিমতো ক্রুদ্ধ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ঘরে ও বাইরে প্রবল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপের মুখে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনে আরও বড়সড় হামলার ইঙ্গিত দিয়েছেন পুতিন। দেশের রিজার্ভ বাহিনীতে নাম থাকা ও সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত কিন্তু শারীরিকভাবে সক্ষম ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের ফের ফৌজে নিয়োগের জন্য ডিক্রি জারি করেছেন তিনি।
আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলিকে হুমকি দিয়ে পুতিন (Vladimir Putin) বলেন, “রাশিয়াকে দুর্বল করে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে পশ্চিমী দুনিয়া। তারা সীমা অতিক্রম করেছে।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হুমকি উড়িয়ে ফের পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, “যদি আমাদের দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়, তাহলে দেশের মানুষকে বাঁচাতে সমস্ত ধরনের অস্ত্রই ব্যবহার করব আমরা। আর এটা ফাঁকা বুলি নয়।” ইউক্রেনে আরও বড় হামলার ইঙ্গিত দিয়ে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে পুতিন বলেন, “দেশের রিজার্ভ বাহিনীতে নাম থাকা ও সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত কিন্তু শারীরিকভাবে সক্ষম ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের ফের ফৌজে নিয়োগের জন্য ডিক্রি জারি করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রের খরচে শিনজো আবের শেষকৃত্যে আপত্তি, প্রতিবাদে প্রকাশ্যে গায়ে আগুন দিল যুবক]
গতকাল রুশপন্থীদের দখলে থাকা পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে গণভোট করার সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন। রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্তির জন্যই এই পদক্ষেপ। বিশ্লেষকদের মতে, দোনবাস অঞ্চল-সহ ইউক্রেনের একটি বড় অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এদিকে, গণভোটের আশঙ্কা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল কিয়েভ। কিন্তু অধিকৃত অঞ্চল দখল করার পরিকল্পনা থেকে আপাতত সরে যাওয়ার কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছেন না পুতিন।
২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া (Russia)। এবার সংলগ্ন খেরসন ওব্লাস্ট বা প্রদেশের প্রশাসনিক কেন্দ্র খেরসন শহর দখল করেছে রুশ বাহিনী। জাপরজাই শহরও প্রায় তাদের নিয়ন্ত্রণে। এবার ওই এলাকাগুলিতে গণভোট হলে ইউক্রেনের বিপদ বাড়বে। কারণ একবার রুশ ভূখণ্ডের অন্তর্গত হলে সেখানে আণবিক অস্ত্র মোতায়েন করতে পারে রাশিয়া। আর তেমনটা হলে ওই এলাকাগুলি পুনরুদ্ধারের আর কোনও সম্ভাবনাই নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, ছ’মাসেরও বেশিদিন ধরে প্রবল যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। শুরুর দিকে লড়াইয়ের ময়দানে রুশ ফৌজ সাফল্য পেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা ভারী হয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর। ইতিমধ্যে হানাদারদের হঠিয়ে খারকভ অঞ্চলের প্রায় গোটাটাই ফের দখল করে নিয়েছে তারা। আশঙ্কা, পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউক্রেনে পারমাণবিক এবং রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া। আর এমনটা করলে ‘ভয়ঙ্কর প্রত্যাঘাত’ করা হবে বলে সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।