shono
Advertisement

কেঁচো খুঁড়তে কেউটে, শুধু আটা নয়, রেশনের চাল বন্টনেও বিরাট দুর্নীতির হদিশ

গমের পর এবার রেশনের চাল দুর্নীতি নিয়ে নতুন একটি মামলা দায়ের করতে চলেছে ইডি।
Posted: 10:32 PM Nov 06, 2023Updated: 10:34 PM Nov 06, 2023

অর্ণব আইচ: বিভিন্ন জেলার গমকল থেকে রেশনের আটা বন্টন দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে এবার চাল বন্টন নিয়ে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ ইডির হাতে এসেছে। কীভাবে বিভিন্ন জেলা থেকে রেশনের বিপুল পরিমাণ ধান চালকলে পাঠানোর পর কুইন্টাল পিছু ২০০ টাকা করে চালকল মালিকরা হাতিয়ে নিয়েছেন, সেই তথ‌্য উঠে এসেছে ইডির তদন্তে।
সোমবার এই ব‌্যাপারে ইডি আদালতে কিছু নথিও পেশ করেছে। নতুন উঠে আসা এই দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ডও ব‌্যবসায়ী বাকিবুর রহমান বলে অভিযোগ ইডির। তাই গমের পর এবার রেশনের চাল দুর্নীতি নিয়ে নতুন একটি মামলা দায়ের করতে চলেছে ইডি।
সেই সূত্র ধরে ইডি সিআইডি ও নিউ মার্কেট থানার কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করতে পারে। 

Advertisement

 

[আরও পড়ুন: ভয় নেই! মণিপুরে জঙ্গিদের ফাঁদে পড়া কমান্ডোদের মৃত্যুমুখ থেকে ফেরাল সেনা]

ইডির সূত্র জানিয়েছে, এই চাল পাচার-কাণ্ডে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে জেরা করা হয়। ইডি আধিকারিকদের জ্যোতিপ্রিয় জানান, ভুয়া কৃষকদের সামনে রেখে চাল পাচার করে যে রাজ‌্য সরকারের তহবিলের টাকা তছরূপ করা হয়েছে, তিনি খাদ‌্যমন্ত্রী থাকাকালীনই সেই তথ‌্য তাঁর কাছে আসে। তখন তিনিই পুলিশকে এই দুর্নীতির তদন্ত করতে বলেন। বিভিন্ন জেলায় এই ব‌্যাপারে একাধিক মামলা হয়। তাঁরই সুপারিশে এই ব‌্যাপারে সিআইডি তদন্ত করে। যেহেতু খাদ‌্যভবন মধ‌্য কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকায়, তাই জ্যোতিপ্রিয়র দাবি অনুযায়ী, তিনি নিউ মার্কেট থানাকেও এই ব‌্যাপারে তদন্ত করতে বলেন। খাদ‌্য দফতরের আধিকারিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশও এর তদন্ত করে। তবে তিনি পরবর্তী সময়ে বনমন্ত্রী হয়ে যাওয়ার কারণে ওই তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট সম্পর্কে জানেন না বলে ইডির কাছে দাবি করেন।

আদালতকে ইডি জানিয়েছে, ভুয়া কৃষকদের নামে অ‌্যাকাউন্ট তৈরি করে সরকারি তহবিলের কোটি কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়। এই অ‌্যাকাউন্টগুলি নিয়ন্ত্রণ করতেন কয়েকজন চালকল ও গমকলের মালিক। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের মিলে ইডি তল্লাশিও চালিয়েছে। কৃষক নন অথবা অন‌্য পেশার সঙ্গে যুক্ত ব‌্যক্তিদের নাম জোগাড় করে তাঁদের পরিচয়পত্র নেওয়া হত। তারই ভিত্তিতে কিছু এজেন্ট অ‌্যাকাউন্ট তৈরির কাজ করত। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি সমবায় সমিতি কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম মূল্যে সরাসরি ধান কিনবে। ধান বিক্রির টাকা সমবায় সমিতি থেকে সরাসরি কৃষকদের অ‌্যাকাউন্টে জমা পড়বে। কিন্তু তার বদলে কিছু চালকল মালিক ও সরকারি আধিকারিকের মদতে মাঝখানে এজেন্টরা ঢুকে পড়ে। অনেকটা জোর করেই কৃষকদের কাছ থেকে ওই এজেন্ট তথা ফড়েরা তুলনামূলভাবে অত‌্যন্ত কম দামে ধান কিনে তা চড়া দামে চালকল মালিকদের সরবরাহ করে। একই সঙ্গে সমবায় সমিতির রেকর্ডে নতুন কৃষক হিসাবে ভুয়া কৃষকদের নামের তালিকা জমা দেওয়া হয়। আসল কৃষকদের দলে ভুয়া কৃষকদের সরকারি তহবিলের টাকা ওই অ‌্যাকউন্টগুলিতে জমা পড়ত। কিন্তু এজেন্টদের মাধ‌্যমে আসলে ওই অ‌্যাকাউন্টগুলি আসলে নিয়ন্ত্রণ করত চালকলের মালিকরা। এভাবে চালকলের মালিকরা প্রত্যেক কুইন্টাল পিছু রেশনের চাল বন্টন করার নামে ২০০ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। ওই টাকার ভাগ মিলের মালিকদের হাত ধরে পৌঁছে যায় এজেন্ট, এমনকী কিছু সরকারি আধিকারিকের কাছেও। চাল পাচার-কাণ্ডে নতুন মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই এজেন্ট ও সরকারি আধিকারিকদের নামের তালিকা তৈরি করে তাঁদেরও তলব করা হবে বলে জানিয়েছে ইডি।

[আরও পড়ুন: PM Modi: ‘প্যালেস্টাইনের সঙ্গ ছাড়িনি’, ‘চাপের মুখে’ বন্ধু ইরানকে আশ্বাস মোদির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement