সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের অশান্তি মণিপুরে (Manipur)। নতুন করে হিংসা ছড়াল সেখানে। পরিস্থিতির চাপে সেনা এবং আধা সামরিক বাহিনীকে তলব করেছে প্রশাসন। নতুন করে জারি হয়েছে কারফিউ। এবার খোদ রাজধানী ইম্ফলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে চরম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এর পরেই তৎপর হয় প্রশাসন। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না চলে যায়, তার জন্য আগভাগে সেনাকে তলব করেছে সরকার।
ইম্ফলের নিউ চেকন অঞ্চলে মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর কয়েক জনের বচসা থেকে অশান্তি শুরু হয়। হাতাহাতি চরম আকার ধারণ করলে লাঠি এবং অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় আহত হয়েছেন দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন। এলাকার কিছু দোকানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। এর পরেই সেনা এবং আধা সামারিক বাহিনীকে নতুন করে তলব করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি বিকেল ৪টে অবধি কারফিউ শিথিল করা হয়েছিল মণিপুরে। যদিও এদিনের সংঘর্ষের পর বেলা ১টা নাগাদ তা ফেরানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: তৃতীয় বন্দে ভারত পেল রাজ্য, হল ট্রায়াল রানও, জেনে নিন এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথ]
মণিপুরে ছাইচাপা আগুন ফের জ্বলে উঠেছে। যদিও এরই মধ্যে লোকচক্ষুর আড়ালে কলকাতার নাগাল্যান্ড হাউসে হয়ে গিয়েছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে সল্টলেকের নাগাল্যান্ড হাউসে যুযুধান মেতেই ও কুকি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই শান্তি আলোচনার পৌরহিত্যে ছিল নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন এনএসসিএন-আইএম (NSCM-IM)। সংগঠনের তরফে হাজির ছিলেন উংমাতেম ভাশুম।
[আরও পড়ুন: নাবালিকার পেটে ভাইয়ের সন্তান! ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের অনুমতি আদালতের]
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে থেকেই মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেতেই জনজাতির সঙ্গে রক্তাক্ত সংঘাত চলছে কুকি-ঝোমি ও অন্য আদিবাসীদের। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন পঞ্চাশ জনেরও বেশি মানুষ। ট্রাইবাল বা আদিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই নতুন কিছু নয়। কয়েকশো বছর ধরে তা চলছে। তবে এবার তা ভিন্ন মাত্রা ধারণ করেছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেতেইরা তফসিলি উপজাতির তকমা দাবি করে বারুদের স্তূপে আগুন দিয়েছে।গত এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকারকে মেতেইদের দাবি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। এর ফলে, কুকি-ঝাোমি ও টাংখুল নাগাদের মতো রাজ্যের সংখ্যালঘু আদিবাসীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে। আবার অনেকের ধারণা, নিজের রাজ্যে জমি বারাতে বসেছে মেতেইরা।