সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে বিস্ময়কর দাবি চিনের। একদলীয় রাজনৈতিক তথা শাসনব্যবস্থা মেনে চললেও গণতন্ত্র নিয়ে কমিউনিস্ট দেশটির এহেন দাবিতে রীতিমতো অবাক দুনিয়া।
[আরও পড়ুন: কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষে ‘ফিরলেন’ চেয়ারম্যান মাও, আমেরিকার বিরুদ্ধে গর্জন চিনের]
এবার প্রশ্ন উঠছে আচমকা এহেন দাবি কেন করছে চিন? এর উত্তর খুবই স্পষ্ট। সম্প্রতি গণতন্ত্র রক্ষা নিয়ে এক আলোচনাসভার আয়োজন করে আমেরিকা (America)। ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি’তে আমন্ত্রণ জানানো হয় ভারতকেও। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিল না চিন এবং রাশিয়ার নাম। অথচ গণতন্ত্রের আলোচনা সভায় আমেরিকা আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাইওয়ানকে। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, বরাবর তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে চিন। ফলে বেজিং মনে করছে, গণতন্ত্ররক্ষার নামে চিনের বিরুদ্ধে কৌশলগত বলয় তৈরি করছে ওয়াশিংটন। আর তাই আমেরিকাকে পালটা দিতে গিয়ে নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে বিস্ময়কর দাবি করছে দেশটি বলে খবর।
শুক্রবার মার্কিন গণতন্ত্র সম্মেলনের পর এনিয়ে বিবৃতি দিয়েছে চিনা বিদেশমন্ত্রক। আমেরিকার ‘গণতান্ত্রিক অস্থিরতা’ রয়েছে বলে দাবি করে চিনা মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, “গণতন্ত্র কোনও কৌশলগত হাতিয়ার নয়, এটি মানবিক মূল্যবোধ। চলতি সপ্তাহের মার্কিন গণতন্ত্র সম্মেলন আসলে আমেরিকার আধিপত্যকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়াস। এবং এটাই সবচেয়ে বড় অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ।” ওয়াশিংটনকে তুলোধোনা করে ওয়েনবিন আরও বলেন, “গণতন্ত্রের স্বঘোষিত ধ্বজাধারীর (আমেরিকা) মধ্যেই গণতান্ত্রিক অস্থিরতা ও খামতি রয়েছে।” বলে রাখা ভাল, মার্কিন গণতন্ত্র সম্মেলনের আগেই একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করে বেজিং। সেখানে দাবি করা হয়, চিনেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বর মাসের ৯-১০ তারিখ ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি’ (Summit For Democracy) নামে ভারচুয়াল আলোচনাচক্রের আয়োজন করে আমেরিকা। বিশ্বে গণতন্ত্রকে কীভাবে মজবুত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে এই সভায়। মূলত তিনটি বিষয়ে আলোচনা হতে চলেছে। এক- একনায়কতন্ত্রের বিরোধিতা, দুই-দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, তিন-মানবাধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। কিন্তু এমন এক আলোচনাসভায় চিন, রাশিয়ার মতো রাষ্ট্রের অনুপস্থিতি বিতর্ক বাড়িয়েছে। আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিল না মায়ানমার, আফগানিস্তানও। কিছুদিন আগেই গণতন্ত্রকে পদদলিত করে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। এদিকে আফগানিস্তানও তালিবানের দখলে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমন্ত্রিতদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তুরস্ক, সৌদি আরব, আরব আমিরশাহী।