অভিরূপ দাস: রোগীরা নয়, করোনা (coronavirus) চিকিৎসায় এবার বেসরকারি হাসপাতালের বিপুল অঙ্কের বিল নিয়ে মুখ খুললেন খোদ চিকিৎসকরাই। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি লিখলেন চিকিৎসকদের একাংশ।
মোটা অঙ্কের বিল। তা মেটাতে না পারলে মৃতদেহ আটকে রাখছে। এমন অভিযোগ এতদিন উঠত রোগীর পরিবারের তরফে। একাধিক ঘটনায় রোগীর পরিবারের হাতে নিগৃহীতও হতে হয়েছে চিকিৎসকদের। চিকিৎসকরা বারবারই বলে এসেছেন, বেসরকারি হাসপাতালে মোটা বিলের পেছনে আদৌ তাঁদের কোনও ভূমিকা নেই। তবে এবার বেসরকারি হাসপাতালের বিল-দুর্নীতি নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়াকে চিঠি দিল চিকিৎসকদের অন্যতম সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম।
[আরও পড়ুন: কোভিড যুদ্ধেও জোটবদ্ধ, রাজ্যে চিকিৎসা কেন্দ্র ও সেফ হোম গড়বে বাম-কংগ্রেস]
সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, “খবরের কাগজ খুললেই নজরে আসছে হাসপাতালের আকাশছোঁয়া বিলের খবর। করোনা আবহে জনমানসে এই ধরণের খবর খারাপ বার্তা দিচ্ছে। সাধারণ মানুষ চিকিৎসকদের উপর খেপে যাচ্ছেন। যেখানে এই আকাশছোঁয়া বিল বা ভরতি ক্ষেত্রে ডাক্তারদের কোনও ভূমিকাই নেই।” চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোনওরকম দুর্নীতি বা রোগীর পরিবারের কোনও হয়রানি হলে তা জন্য দ্রুত নিষ্পত্তি করে অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া, এমনই দাবি জানানো হয়েছে ডক্টরস ফোরামের পক্ষ থেকে। রোগীর পরিবারের বিপুল বিলের অভিযোগ মেটাতে র্যাপিড রেসপন্স টিম তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শ্যামনগরের এক চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয় মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। হাসপাতাল ১৮ লক্ষ টাকা বিল করার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তা নিয়ে বিপুল সমালোচনা হয়। অবশেষে স্বাস্থ্য কমিশনের চাপে বিল কমায় ওই হাসপাতাল। প্রশ্ন ওঠে এক চিকিৎসকই যেখানে ওই বিল দিতে পারছেন না নিম্নবিত্ত মানুষ কি করে সেই বিল দেবেন?
[আরও পড়ুন: লকডাউনেও বাড়তি ফি, বেসরকারি স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিতে কমিটি গড়ার নির্দেশ আদালতের]
সেই ঘটনাকে মাথায় রেখেই ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের পক্ষ থেকে আরও একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্যে স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য কোনও ডেডিকেটেড হাসপাতাল নেই। ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক ডা. কৌশিক চাকি জানিয়েছেন, ”বেসরকারি ক্ষেত্রে করোনা চিকিৎসায় যা খরচ হচ্ছে, তা বহন করার ক্ষমতা অনেক স্বাস্থ্য কর্মীরই নেই। তাই স্বাস্থ্য সচিবের কাছে আমরা দাবি রেখেছি, রাজ্যের প্রতিটি জেলায় স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য লেভেল ফোর স্তরের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি রাখতে হবে। যাঁরা জীবনকে তুচ্ছ করে টানা কুড়ি ঘন্টা পরিষেবা দিচ্ছেন তাঁরা যেন অসুস্থ হলে ন্যায্য মূল্যে চিকিৎসাটা পান।”
The post করোনায় চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালের বিপুল বিল নিয়ে এবার সরব চিকিৎসকদেরই একাংশ appeared first on Sangbad Pratidin.