সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’-এর পালটা এবার তৃণমূলের ‘তথাস্তু’। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঝাড়খন্ড লাগোয়া পুরুলিয়ায় (Purulia) ফের বিজেপি গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনের মতো ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি সামনে রেখে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে। তাই রাজনীতিতে ওই ধর্মীয় স্লোগানের পালটা ‘তথাস্তু’ বলে মোকাবিলা করবে শাসকদল তৃণমূল।
রবিবার রাতে এই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় পুরুলিয়ার পুঞ্চার ধাদকি গ্রামে। সেখানে সোমবার কেন্দ্রের উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডার সফরকে ঘিরে ওই রাতে বিজেপি নেতাকর্মীরা দলীয় পতাকা বাঁধছিলেন। সেই সময় পুঞ্চা থেকে লালপুর-মানবাজার রাস্তা ধরে ওই ধাদকি মোড় হয়ে নিজের বাড়ি লাখরা যাচ্ছিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন ওই বিজেপি (BJP) নেতাকর্মীরা একেবারে তাঁর গাড়ির সামনে এসে ক্রমাগত ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে থাকেন। সেই ধ্বনি শুনেই কনভয় থামাতে বলেন সভাধিপতি। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে দু’হাত তুলে তাদেরকে ‘তথাস্তু’ বলতে থাকেন। সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যম-সহ হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হতেই ‘জয় শ্রীরাম’-এর পালটা ‘তথাস্তু’ তৃণমূলের হাতিয়ার হয়ে যায়। সভাধিপতি সোমবার বলেন, “ওনাদের আর কি বলব? আমাদের দেখে যখন ওনারা সকলেই ‘শ্রীরামচন্দ্র’ বলছেন। তখন ওনাদেরকে আশীর্বাদ না করে কি আর পারি! তাই ‘তথাস্তু’ বলছি।”
[আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতি মিললেও হয়নি দাবিপূরণ, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই ভোট বয়কট মতুয়াদের]
গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির পালটা এই জেলায় কোন স্লোগান ছিল না শাসকদল তৃণমূলের (TMC)। তবে লোকসভা ভোটের পর পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস ‘হর হর মহাদেব’ স্লোগান তুলেছিল। কিন্তু এবার বিধানসভা ভোটের বাজারে কংগ্রেসের সেই স্লোগান এখনও জেলায় সেভাবে জমেনি। কিন্তু রবিবার রাতে পুঞ্চার ধাদকি গ্রামের ওই ঘটনার পর বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’-এর পালটা ‘তথাস্তু’ এখন এই জেলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। গত লোকসভা নির্বাচনের সময় এই ‘জয় শ্রীরাম’ আবেগ দমাতে সভাধিপতির নেতৃত্বে বলরামপুরের গেরুয়া গড়ে ‘সংকটমোচন হনুমান দল’ সামনে আসে। আর এবার ‘তথাস্তু’ দিয়েই পুরুলিয়ায় ‘জয় শ্রীরাম’-এর মোকাবিলা করবে তৃণমূল। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূল ‘জয় শ্রীরাম’কে ভয় করছে। ওনারা ভোটের আগে পালটা যে স্লোগানই আনুন না কেন তা আর কাজ করবে না। পুরুলিয়ার মানুষের মুখে মুখে এখন ‘জয় শ্রীরাম’।”