স্টাফ রিপোর্টার: মায়ের বালিশের তলায় ছিল কানের দুল। রাতে কোনও এক সময়ে সেই দুল গিলে ফেলে এক বছর ১০ মাসের শিশু। সকালে বালিশের তলায় দুল না পেয়ে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান বাড়ির সবাই। আবার মেয়েকে খাওয়ানোর সময় দুধ গিলতে না পেরে হাঁ করে কাঁদতে থাকে মেয়ে। এবার সবার মনে হল মেয়ে দুল গিলে ফেলেনি তো? আসলে তাই হয়েছিল।
গত শনিবার দুপুরে কোনও কাটাছেঁড়া না করেই নদিয়ার বাসিন্দা ওই একরত্তির খাদ্যনালি থেকে সোনার দুলটি বের করে প্রাণ বাঁচিয়েছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (NRS Medical College)। হাসপাতালের ইএনটি বিভাগ সূত্রে খবর, ওই দিন সকালে শিশুটিকে হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে নিয়ে আসেন বাবা-মা। নিজেদের সন্দেহের কথা বলার পাশাপাশি চিকিৎসকদের আর একটি দুল দেখান।
[আরও পড়ুন: হাফিজুল মোল্লাই কি ঢুকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে? নিশ্চিত হতে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের আবেদন পুলিশের]
এক্সরে করে দেখা যায় শিশুর খাদ্যনালিতে কিছু আটকে একটা রয়েছে। যা দেখতে ওই দুলের মতোই। তখন চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন শুক্রবার রাতে কোনওভাবে সেটি গিলে ফেলেছিল ওই মেয়ে। এরপরে ‘ইসোফ্যাগোস্কোপি’ করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। বিশেষ দল গঠন করে চিকিৎসা শুরু করেন। শিশুটিকে অজ্ঞান করে খাদ্যনালিতে পাইপ ঢুকিয়ে ‘ফরসেপ’-দিয়ে দুল বের করার কাজ শুরু হয়।
ইএনটি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুমন্ত দত্ত, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রণবাশিস বন্দোপাধ্যায়, অর্পিতা মহান্তি, সায়ন্তন রায়, টি প্রুস্টি ও অ্যানাস্থেটিস্ট মধুরিমা রায়ের দল ওই দুলটি বের করে আনেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, শিশুর খাদ্যনালি অত্যন্ত পাতলা এবং সেখানে সূচালো দুলটি আটকে ছিল। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তা বের করে আনাটা বেশ ঝুঁকির ছিল। সোমবার শিশুটির রাইলস টিউবও খুলে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন পরে বাড়ি ফিরবে মেয়ে।