নব্যেন্দু হাজরা: করোনা (Corona Virus) কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে মেট্রো। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সচল থাকছে পাতালপথ। আপ-ডাউন মিলিয়ে ২৮৪ ট্রিপ চলছে সারাদিনে। কিন্তু এতকিছু সত্ত্বেও বাড়ছে না যাত্রী। আগের চেয়ে দিনে প্রায় দু’লক্ষের বেশি যাত্রী কমেছে শহরের লাইফলাইনে। যা নিয়ে চিন্তায় কর্তৃপক্ষও।
রাস্তায় যেখানে বাসের আকাল, অটো, ট্যাক্সি মাত্রাছাড়া ভাড়া নিচ্ছে, তা সত্ত্বেও পাতালপথে ভিড় বাড়ছে না। স্কুল-কলেজ খোলার আগে তো যাত্রীসংখ্যা তিন লক্ষের গণ্ডিও ছাড়াচ্ছিল না। এখন তাও কিছুটা বেড়েছে। মেট্রোসূত্রে খবর, আগে যেখানে গড়ে রোজ সাত লক্ষের উপরে যাত্রী হত এখন তাই কমে চার লক্ষ সত্তর হাজার থেকে চার লক্ষ নব্বই হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। অথচ ট্রেনের সংখ্যা প্রায় একই আছে। আগে সারাদিনে চলত ২৮৮ ট্রিপ ট্রেন, সেই জায়গায় এখন ২৮৪ ট্রিপ ট্রেন চলছে। অর্থাৎ চার ট্রিপ ট্রেন কম চললেও যাত্রী কমেছে দিনে দু’লক্ষের কাছাকাছি।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সম্মানহানির অভিযোগ, বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে FIR তৃণমূল নেতার]
কোভিডবিধি উঠে রাজ্যে সবকিছুই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে। রাতের নিয়ন্ত্রণবিধিও উঠে গিয়েছে। স্কুল-কলেজ-অফিস-আদালত সবকিছুই খোলা। তবু পাতালপথে যাত্রীখরা অব্যাহত। জ্বালানির অত্যধিক দামবৃদ্ধিতে রাস্তা থেকে কমেছে বাস-ট্যাক্সি-অটো। তাই হিসাব মেনে সেই যাত্রীসংখ্যার একটা অংশের মেট্রোতে সফর করার কথা। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। মেট্রোকর্তাদের দাবি, ধীরে ধীরে বাড়ছে। মাস দুয়েক আগেও তো তিন লক্ষের গণ্ডি ছাড়াচ্ছিল না। যাত্রী না বাড়ায় পরিষেবা দিতে মেট্রোর ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা। সূত্রের খবর, এখন মেট্রোর ১০০ টাকা আয় করতে খরচ হচ্ছ ৮০০ টাকার বেশি। কর্তাদের কথায়, একটা সময়ে ১০০ টাকা আয় করতে ৩০০ টাকা খরচ হত। কিন্তু যাত্রী বাড়তে থাকায় তা কমে ২৬৪ টাকা হয়। এখন তা তিনগুণ হয়েছে। তাছাড়া বেড়েছে খরচও। সমস্ত রেক এসি হওয়ায় বিদ্যুতের খরচও বেড়েছে। কিন্তু যাত্রীভাড়া থেকে আয় একধাক্কায় অনেকটা কমায় চিন্তা বেড়েছে কর্তৃপক্ষের। তাই স্টেশন থেকে মেট্রোর স্মার্ট কার্ড সবকিছুই ব্র্যান্ডিং করে বিকল্প উপায়ে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মেট্রোর আধিকারিকদের কথায়, আসলে করোনাকালে প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাঁরা আর শহরে আসছেন না। প্রচুর মানুষের ওয়ার্ক ফ্রম হোম হয়ে গিয়েছে। যার প্রভাব গণপরিবহণে তো পড়বেই। বাসে-অটোতেও আগের তুলনায় যাত্রী কমেছে। তেমনই কমেছে পাতালপথেও। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর অবস্থা তো আরও খারাপ। সেখানে কোনওদিন হাজার তো কোনওদিন বারোশো যাত্রী হচ্ছে গড়ে। তবে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন চালু হলে সেই যাত্রীসংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়বে। তবে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় ফের আগের মতো সাত লক্ষ যাত্রী আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন মেট্রোর আধিকারিকরাই।