অর্ণব আইচ: হাই কোর্টে ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দিয়ে গ্রেপ্তার এক বৃদ্ধ। তাঁর সঙ্গে বাঁকুড়ার একটি নার্সিং হোমের ম্যানেজারকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই ব্যক্তির নাম নরনাথ দত্ত ও শিবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়।
ঘটনার সূত্রপাত বহু আগে। ২০১২ সালে নরনাথ চন্দ্র ‘স্যাট’ আদালতে একটি মামলার সম্মুখীন হন। কয়েক মাস আগে অর্থাৎ প্রায় ১১ বছর পর ওই মামলাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি হাই কোর্টে আবেদন করেন। হাই কোর্ট তাঁর কাছ থেকে জানতে চান, এত বছর পর তিনি কেন এই আবেদন জানালেন? উত্তরে ৭১ বছর বয়সের নরনাথ চন্দ্র জানান, অসুস্থতার কারণেই তাঁর দেরি হয়েছে। হাই কোর্ট তাঁর কাছ থেকে অসুস্থতার প্রমাণ চায়। কিছুদিন পর তিনি বাঁকুড়ার এক চিকিৎসকের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দেন। আদালত ওই শংসাপত্র দেখে সন্দেহ প্রকাশ করে। হাই কোর্ট ওই চিকিৎসককে তলব করে। চিকিৎসক ওই শংসাপত্রটি দেখে আদালতে দাবি করেন যে, সেটি তাঁর লেখা নয়। এমনকী, তাঁর সইও জাল করা হয়েছে। ওই ভুয়ো সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার কারণে হাই কোর্ট নরনাথ চন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ ছাড়াও হাই কোর্টের রেজিস্টারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করার।
[আরও পড়ুন: ‘বাড়তি আর ১ দিনও নয়’, অভিষেক মামলায় ইডিকে নথি পেশের সময় বেঁধে দিল আদালত]
সেইমতো নরনাথ চন্দ্রর বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় মামলা দায়ের হয়। তারই ভিত্তিতে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের জালিয়াতি দমন শাখা তদন্ত শুরু করে। নরনাথ দত্তকে গোয়েন্দা পুলিশ জেরা করে। জেরার মুখে তিনি পুলিশকে জানান যে, বাঁকুড়ার একটি নার্সিং হোমের ম্যানেজার তাঁকে ওই মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জোগাড় করে দিয়েছেন। গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন যে, ওই জাল শংসাপত্রটি তৈরি করেছেন শিবশঙ্কর মুখোপাধ্যায় নামে ওই ম্যানেজার। দু’জনকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাঁদের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।