অকপটে বললেন নুসরত৷ আজ মুক্তি পাচ্ছে তাঁর আর দেবের ‘লাভ এক্সপ্রেস’। এই সুযোগে নিজের জীবনের লাভ এক্সপ্রেসের সফরনামা উঠে এল নায়িকার জবানিতে।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবারও নতুন ছবির রিলিজ৷ প্রোমোশন-এর চাপ৷
নুসরত: প্রোমোশন করা দায়িত্ব৷ চাপ নয় আমার কাছে৷ একটা ছবির সাফল্য প্রোমোশনের ওপর নির্ভর করে৷ আই অ্যাম হ্যাপি৷ অনেকদিন বাদে আমাকে আর দেবকে দর্শক একদম অন্যরকম ভাবে পাবে৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ট্রেলারটা লোকজনের ভাল লেগেছে৷ কিন্তু ছবিটা আরও আগে রিলিজ হওয়ার কথা ছিল না?
নুসরত: অন-অফ করতে করতে এক বছর হয়েছে ঠিকই৷ রাজীবদার ছবি এমন হয়৷ ‘পাওয়ার’-এর আগে দেবের সঙ্গে আমার ‘খোকা ৪২০’ ছিল৷ সেটাতেও রাজীবদা ছিল৷ অলমোস্ট এক বছর লেগেছিল রিলিজ ফাইনাল হতে৷ আমার মনে হয়, এই ছবিটাতে লোকজন আমাদের চরিত্রটার সঙ্গে কানেক্ট করবে৷ লাল আর নীল আমাদের নাম৷ ট্রেন মিস করাটা মানুষের জীবনে থাকেই৷ কাজেই মজা পাবে লোকজন৷ আমি অনেকটাই আশা করছি এই ছবিটার ওপর৷ ট্রেন মিস করার গল্প, ইট্স অ্যাবাউট জার্নি৷ আর আমি নীল অর্থাৎ ‘নীলাশা’ আর দেব লাল ওরফে ‘রক্তিম’৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপনি নিজে কখনও ট্রেন মিস করেছেন?
নুসরত: হ্যাঁ, করেছি৷ এই তো গত বছর ‘ব্যোমকেশ’-এর শুটিং করতে করতে কলকাতায় এসেছিলাম দু’দিনের জন্য৷ তারপর শুটে ফেরার সময় রাতের ট্রেন ছিল৷ স্ট্র্যান্ড রোডের বীভৎস জ্যামে আটকে গেলাম৷ ব্যস, ট্রেন মিস করলাম৷ শেষে ভায়া দিল্লি ফ্লাইট-এ গেলাম৷ খুব হেকটিক ছিল জার্নিটা৷ ট্রেন মিস আমার কাছে খুব খারাপ অভিজ্ঞতা৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই ছবির ইউএসপি কি আপনি আর দেবের জুটি?
নুসরত: আমার আর দেবের কেমিস্ট্রি দারুণ৷ কিন্তু এছাড়াও ছবিটার অনেক ইউএসপি আছে৷ আমার তো ডাবিং করতে গিয়েই ছবিটা দেখতে ইচ্ছে করছিল৷ আর রোমান্স ছাড়িয়ে এই কেমিস্ট্রিটা অনেকটা টম অ্যান্ড জেরির মতো৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই বছরটা নুসরতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ একদিকে কমার্শিয়াল ছবি, অন্যদিকে অফবিট ছবি৷
নুসরত: ঠিকই বলেছ৷ তবে খুব বেশি এক্সপেক্ট করি না৷ আই জাস্ট গো উইথ দ্য ফ্লো৷ দেড়শো শতাংশ দিয়েছি৷ পজিটিভ আউটকাম চাই৷ দর্শকের পছন্দ কেটার করতে পারছে কি না সেটা আমার দায়িত্ব৷ আর কিছু মাথায় চাপতে দিই না, যে বছরে চারটে না পাঁচটা ছবি হয়ে গেল৷ এগুলো কোনও বড় ব্যাপার নয় আমার কাছে৷ আর নিজের ভাগ্যকে প্রশংসা করি৷ ব্যস৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নুসরত বললে প্রথমে মনে আসে ডাকসাইটে সুন্দরী৷ পরে আসে অভিনেতা৷ রাগ হয় না?
নুসরত: আমি ‘শত্রু’ যখন করেছিলাম তখন কিছুই জানতাম না৷ ক্যামেরার কোন দিকে কীভাবে তাকাব- কিচ্ছু না৷ আমার চোদ্দো গুষ্টির কেউ সিনেমা করেনি৷ এখনও বেশি কিছু ভাবি না৷ প্রত্যেকটা ছবিতে আমি শিখছি৷ আমার মনে হয় দর্শকও সেটা বুঝতে পারে৷ ‘ব্যোমকেশ’-এর পর থেকে অনেক শিখেছি৷ আর যখন ‘লাভ এক্সপ্রেস’ দেখবে তখনও বুঝবে এটা ‘নীলাশা’; নুসরত না৷ নুসরত ওরকম না৷ এটা মাই ওয়ান অফ দ্য বেস্ট অ্যাকটেড ফিল্ম৷ অভিনয়ের জায়গা খুঁজে চলেছি আমি অবিরত৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিন্তু এই ধরনের কমার্শিয়াল ছবিতে নায়িকা স্রেফ আই ক্যান্ডি…
নুসরত: না৷ এই ছবিতে আমার জাস্ট তিনটে জামা৷ কোনও আলাদা লুক নেই৷ কীভাবে আই ক্যান্ডি হয়ে ঘুরব? সেম লুক সবসময়৷ চরিত্রে অভিনয়ই শেষ কথা৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামিদিনে তা হলে অ্যাক্টর নুসরতকে পাব?
নুসরত: আমি আত্মবিশ্বাসী৷ অভিনয়টা জানতামই না৷ প্রত্যেকটা ফিল্ম পেরিয়ে সেটা শিখছি৷ শুরুটা অরিন্দমদার হাত ধরে৷ কিন্তু আমি এ কথাও বলব রাজীবদা, রবিজির ছবিতে কাজ করতে গিয়েও শিখেছি৷ প্রত্যেকটা ছবিতেই দারুণ অভিজ্ঞতা৷ আমি আদতে ডিরেক্টর্স অ্যাক্টর৷ যেমন ‘জুলফিকর’ করতে গিয়ে সৃজিতদার কাছে একদম সারেন্ডার করেছি৷ সৃজিতদা সকাল থেকে সন্ধে অবধি অপেক্ষা করতে পারে নিখুঁত শট-এর জন্য৷ সাংঘাতিক খেটে আমরা কাজটা করেছি৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার পুজোয় অনেক ছবি একসঙ্গে আসবে, সেটা খারাপ নয়?
নুসরত: না, আমি ভাবি একটা বুফে অর্ডার করা হয়েছে৷ যে যেটা খুশি খাবে৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অরিন্দম শীল আগামী ‘ব্যোমকেশ’-এ আপনাকে নিলেন না! রাগ হয়নি?
নুসরত: না, না৷ আমার করার মতো চরিত্র কোথায়? যেটা করতে পারব, সেটাতে তো নেবেন!
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অথচ আপনার বন্ধু সায়ন্তিকা করছে এই ছবিতে…
নুসরত: হ্যাঁ, ওটা ওরই রোল৷ পুরনো দিনের বাঈজির চরিত্রে ওকে দারুণ মানাবে৷ আর একটা কারণ শি ইজ এ ফ্যাবুলাস ডান্সার৷ ওকে আমি-ই প্রথম বলেছিলাম এই রোলটা কর৷ গয়না-স্টাইলিং নিয়ে আমরা আলোচনাও করেছিলাম৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চারিদিকে যখন সম্পর্ক ভাঙছে তখন আপনি চিন্তিত নন?
নুসরত: তুমি যাদের কথা বলছ তারা আমার বন্ধু৷ নিজের ক্ষেত্রে বলতে পারি পাঁচ বছরের কমিটেড সম্পর্কে আছি আমি৷ হ্যাঁ, এটা ঠিক সিচুয়েশন কখন কী হয় কিছুই বলা যায় না৷ সবই ভাগ্য৷ আমি চেষ্টা করছি একটা স্টেবিলিটি আনার৷ বিয়ের পরেও কিন্তু সম্পর্ক ভাঙে৷ আমি চেষ্টা করব সেটা স্টেবল রাখার৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার কি বলবেন সেই মনের মানুষটির কথা?
নুসরত: (হাসি) এখন থাক৷ ও লো প্রোফাইল-এর জীবন ভালবাসে৷ আজকে আমি বড় গলায় কমিটেড থাকার কথা বলছি৷ কারণ আমি একদম সাধারণ মানুষ৷ নায়িকা নই৷ সিনেমা করি বলে শুধু মিনারেল ওয়াটার খাব, বাড়িতে ঘড়ার জল খাব না- সেই শিক্ষা আমি পাইনি৷ প্রথমে আমি মানুষ৷ চিরকাল সেরকমই থাকব৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাচার শো, না শুটিং- কোনটা বেশি পছন্দ?
নুসরত: আমার কাছে সিনেমার জন্য টাকাটা ম্যাটার করে না৷ রোলটা গুরুত্বপূর্ণ৷ ফিল্মের প্রায়োরিটি আমার কাছে অনেক আগে৷ ফিল্ম-এর গানগুলো হিট না হলে মাচায় গিয়ে কী করব৷ ছবি আছে বলেই আজকে মাচা হিট হয়েছে৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ভেঙ্কটেস ফিল্মস’-এর ব্যানার ছাড়া কি ছবি করবেন না? ছবির সংখ্যা বাড়ানো উচিত মনে হয় না?
নুসরত: ছবির সংখ্যাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয় কিন্তু! একটু স্লো যেতে অসুবিধে কোথায়? আমার খুব তাড়া নেই৷ আপাতত ভেঙ্কটেশ-এর কাজ পরপর আসছে তাই করছি৷ সেরকম ব্যাপার নয়, যে এই ব্যানার ছাড়া আর কাজ করব না৷ নিশ্চয়ই অন্যদের ছবি করব৷ তেমন রোল পেলে!
(সাক্ষাৎকার: শম্পালী মৌলিক, শুটিংস্থল: দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন, ছবি: শুভেন্দু চৌধুরি)
The post পাঁচ বছর ধরে আমি কমিটেড: নুসরত জাহান appeared first on Sangbad Pratidin.