অর্ণব আইচ: এ যেন সিনেমা। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে কলকাতার (Kolkata) বুকে বাস্তবেই ঘটে গেল ঘটনাটি। একতলার হোটেলে জ্বলছে আগুন। তিনতলায় আটকে ৯৩ বছরের বৃদ্ধা। প্রচণ্ড ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে বাড়িতে। এর মধ্যেই আগুনকে তোয়াক্কা না করেই তিনতলা থেকে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নিজের পিঠে চাপিয়ে নিচে নিয়ে এলেন শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের ওসি (OC) প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এহেন প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের কথা এখন ফিরছে সকলের মুখে মুখে। কলকাতা পুলিশের বহু পুলিশকর্মীই তাঁকে ‘আইডল’ মনে করছেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছ, গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে এই অগ্নিকাণ্ড (Fire)। সেটিও বাইরে বের করে নিয়ে আসেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটে। উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর থানা এলাকার এপিসি রোডের তিনতলা বাড়িটির একতলায় রয়েছে হোটেলটি। সেখান থেকেই ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে একতলায়। শ্যামপুকুর থানা, শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের পুলিশ ও দমকলের একটি ইঞ্জিন পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। আতঙ্কে উপরের তলা থেকে নেমে আসেন বাসিন্দারা।
[আরও পড়ুন: ভারতকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বানানোর শপথ বিজেপি বিধায়কের, বিতর্কে ভাইরাল ভিডিও]
তখনই পুলিশ জানতে পারে যে, তিনতলায় প্রচণ্ড ধোঁয়ায় আটকে রয়েছেন ৯৩ বছরের বৃদ্ধা কল্পনা ধর। তাঁর ছেলে বিদেশে থাকেন। বৃদ্ধা হাঁটাচলা করতে পারেন না বলে নামতেও পারেননি। ধোঁয়ার মধ্যেই কনস্টেবল শ্যামল সিং সর্দারকে সঙ্গে নিয়ে উঠতে থাকেন সিঁড়ি দিয়ে। মাস্কে মুখ ঢেকে তিনতলায় উঠে দেখেন, ঘরের ভিতর প্রায় অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। তাঁকে পিঠে তুলে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসেন প্রসেনজিৎবাবু। তাঁকে বাইরে নিয়ে আসেন।
[আরও পড়ুন: দিঘার হোটেলে মধুচক্র, দেহব্যবসার রমরমা! পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার তিন যুবতী-সহ ৬]
এরপর কালক্ষেপ না করে বৃদ্ধার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তখন একতলা ভরে গিয়েছে গ্যাসের গন্ধে। বোঝা যায়, সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক হওয়ার ফলেই এই আগুন। গ্যাস সিলিন্ডার যদি ফেটে যায়, তার ফল হবে মারাত্মক। প্রাণের মায়া না করেই শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের ওসি সেই গ্যাস সিলিন্ডারটি নিরাপদে বের করে আনেন। দমকলের ইঞ্জিন আগুন আয়ত্তে আনে। সিলিন্ডারটি ভিজিয়ে দেওয়া হয়। অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।