সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২,৯৮৯ কোটি টাকা টাকা খরচ করে নর্মদার তীরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তির উন্মোচন করে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’র সব থেকে বড় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ নিজের দুর্গ গুজরাটে রাজকীয় অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি উন্মোচিত করে ভাষণও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ তুলেছেন ‘এক ভারত, শ্রেষ্ট ভারত, অখণ্ড ভারতে’র স্লোগান৷ কিন্তু, এই ‘অখণ্ড ভারতে’র বুকেই নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটিয়ে রীতিমতো মোদিকেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন ওড়িশার অনামী গ্রামে এক শিল্পী৷ সাড়ে তিন ইঞ্চির সব থেকে ছোট সর্দার সাহেবের মূর্তি গড়ে দেশকে চমকে দিলেন ওড়িশার এল ঈশ্বর রাও৷ জাতীয় ঐক্য দিবসে দেশকে সম্মান জানাতেই তাঁর এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন শিল্পী৷
[‘চরিত্রহীন বলায় রাগের বশে পোশাক খুলেছিলাম’, স্বীকারোক্তি মুম্বইয়ের মডেলের]
সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাও বলেন, ‘‘জাতীয় ঐক্য দিবসকে মাথায় রেখে সর্দার সাহবের সব থেকে ছোট মূর্তি তৈরি পরিকল্পনা নিই৷ সাড়ে তিন ইঞ্চির এই মূর্তি তৈরি করতে আমার সময় লেগেছে মাত্র তিন দিন৷’’ গত ২০ বছর ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মূর্তি গড়ে নিজের জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছেন ভুবনেশ্বরের জাতনি গ্রামের শিল্পী এল ঈশ্বর রাও৷ গত ফুটবল বিশ্বকাপেও পেন্সিলের উপর বিশ্বকাপের ট্রফি বানিয়ে চমকে দিয়েছিলেন৷ এবার সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সব থেকে ছোট মূর্তি গড়ে ফের জাতীয় সংবাদমাধ্যমের নজর ছিনিয়ে নিলেন বছর ৩৫-এর এল ঈশ্বর রাও৷
[রাফালে ধাক্কা কেন্দ্রের, ১০ দিনের মধ্যে দাম জানানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের]
বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে বিশ্বের উচ্চতম ভাস্কর্যের উন্মোচন হয়৷ এতদিন পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ ইমারত ছিল চিনের বিখ্যাত বুদ্ধ মন্দির। বল্লভভাইয়ের মূর্তির উচ্চতা তার থেকেও অনেক বেশি। আমেরিকার স্ট্যাচু অফ লিবার্টির থেকে প্রায় দ্বিগুণ উঁচু এই মূর্তি। সাধারণ উচ্চতার একজন মানুষের থেকে এই মূর্তি ১০০ গুণ বেশি বড়। প্যারিসের দু’টি আইফেল টাওয়ারের যে উচ্চতা, এই মূর্তির উচ্চতা তার থেকেও বেশি। মূর্তি গড়তে খরচ হয়েছে ২,৯৮৯ কোটি টাকা। নমর্দা বাঁধ থেকে এই মূর্তির দূরত্ব মাত্র সোওয়া তিন কিলোমিটার। সেখানেই সাধুবেট নামে একটি দ্বীপে দাঁড়িয়ে রয়েছে মূর্তিটি। নদীর থেকে দ্বীপে যাওয়ার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে আড়াইশো মিটার লম্বা একটি সেতুও।
[ভারতীয় সেনার বড়সড় সাফল্য, কাশ্মীরে নিকেশ জঙ্গি আজহারের ভাইপো]
মূর্তি নির্মাণ করতে দেশের ৭০ হাজার গ্রামের বাসিন্দার কাছ থেকে কৃষিতে ব্যবহৃত লোহার দ্রব্য সংগ্রহ করা হয়। কৃষকদের কাছ থেকে এভাবেই পাওয়া ১৩৫ টন লোহা গলিয়ে তৈরি হয়েছে এই বিশাল স্থাপত্য। এই প্রকল্পে একটি তিনতারা হোটেল, অডিটোরিয়াম, প্রদর্শনশালা এবং সর্দার বল্লভভাইয়ের জীবন ও কাজ তুলে ধরতে সংগ্রহশালাও নির্মাণ করা হয়েছে। মূর্তির চূড়ান্ত নকশা প্রস্তুত করেছেন বিখ্যাত ভাস্কর রাম সুতার। বল্লভভাইয়ের দু’ হাজারেরও বেশি ছবি দেখে তিনি মূর্তির নকশা তৈরি করেছেন। পৃথিবীর এই উচ্চতম ভাস্কর্য অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে। ১৮০ কিলোমিটার বেগের ঝড় ও রিখটার স্কেলে ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্পেও এই স্থাপত্যের কোনও ক্ষতি হবে না। মূর্তির বুকে থাকা প্রদর্শশালা দেখতে ওঠার জন্য রয়েছে দু’টি উচ্চগতি সম্পন্ন লিফট। এই লিফটে একসঙ্গে ২০০ জন দর্শক উঠতে পারবেন।