সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েক মাস আগে এই মেয়েটিই সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। অহিন্দু হিসাবে গীতার শ্লোক নিখুঁত আওড়ে ওড়িশার কেন্দাপাড়া জেলায় সেরা হয়েছিল ফিরদৌস। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মুসলিম বালিকা হিসাবে এই নজির গড়লেও পিছুটান কমে আসেনি। কেন কোরান বাদ দিয়ে ফিরদৌস শুধু গীতা পড়বে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্থানীয় মৌলবিদের একাংশ। কার্যত তাদের চাপেই ফিরদৌসকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে আনলেন অভিভাবকরা। ছোট্ট মেয়েটিকে অন্য স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে।
[পেহলু খানকে কেউ মারেনি! অভিযুক্ত ৬ হিন্দুর বিরুদ্ধে বন্ধ তদন্ত]
ফিরদৌসের মা আরিফা বিবি জানিয়েছেন, শোভনিয়া শিক্ষাশ্রম থেকে মেয়েকে আর পড়াচ্ছেন না। কারণ স্থানীয় মৌলবিদের থেকে এই নিয়ে তাঁকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। এমনকী স্বজনদের কেউ কেউ এব্যাপারে নানা প্রশ্ন তুলেছিল। গত কয়েক মাসে একই কথা বারবার শুনতে শুনতে তিনি বিরক্ত হয়ে পড়েন। তার জেরেই মেয়েকে আর ওই স্কুলে না পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ফিরদৌসের দাদাও ওই স্কুলে পড়ত। সাম্প্রতিক বিতর্কের জেরে দুই সন্তানকে স্কুল থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন আরিফা বিবি। কেন্দাপাড়ার শোভনিয়া শিক্ষাশ্রমে ফিরদৌস প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। ফিরদৌসের বাবা সৌদি আরবে কাজ করেন। আরিফা বিবির কথায় স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফিরদৌস স্কুল ছাড়ায় স্পষ্টতই খুশি স্থানীয় মুসলিম ধর্মগুরুরা। এক মৌলবীর দাবি, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন জোর করে বাচ্চাদের গীতা পড়ানো হত। পড়াশোনার বদলে ধর্মীয় শিক্ষা বেশি উৎসাহ দেওয়া হত। তার জন্য ফিরদৌসের অভিভাবকরা মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে দেন।
[ধর্ষণে কী মেলে? শতাধিক বন্দির উত্তর চমকে দিল এই তরুণীকে]
ফিরদৌসের স্কুল ছাড়ার ঘটনা মেনে নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শোভনিয়া শিক্ষাশ্রমের প্রধান শিক্ষিকা ঊর্মিলা করের বক্তব্য, ফিরদৌস ভাল ছাত্রী। গীতার দিকে তার ঝোঁক ছিল। তবে তাঁর দাবি স্কুলে বাচ্চাদের ধর্মীয় বিষয়ে বাড়তি কোনও উৎসাহ দেওয়া হয় না। ফিরদৌস এবং তার দাদা ওই স্কুলের ১১০ জন পড়ুয়ার মধ্যে একমাত্র সংখ্যালঘু ছিল। দুজনের প্রস্থানে প্রশ্ন উঠেছে মৌলবিদের চাপে কি আত্মসমপর্ণ করল ছাত্রীটির পরিবার, নাকি তাদের বোঝাতে ব্যর্থ স্কুল কর্তৃপক্ষ। আপাতত এই ধোঁয়াশার মধ্যে নতুন স্কুলের পথে একরত্তি মেয়ে।
The post গীতা আওড়ে মৌলবিদের চক্ষুশূল, স্কুল ছাড়তে বাধ্য হল মুসলিম কন্যা appeared first on Sangbad Pratidin.