সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্পত্তির (Property) উত্তরাধিকার। তা সে আপনজনই হোক কিংবা দূর সম্পর্কের কেউ! পরবর্তী প্রজন্মকে সম্পত্তি দান করে যায় পূর্বপুরুষ, এ তো জগতের স্বাভাবিক ঘটনা। আবার স্নেহপরবশ হয়ে নিজের সম্পত্তি অন্য কাউকে দান করাও নতুন ব্যাপার নয়। এই পথে হেঁটে বিশেষভাবে নজর কাড়লেন দেরাদুনের এক মহিলা। তিনি নিজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দিয়ে যাননি রক্তের সম্পর্কের কাউকে। এমনকী দরিদ্র কোনও ব্যক্তি কিংবা তাঁদের জন্য কাজ করা কোনও সংগঠনকেও নয়। ৭৮-এর বৃদ্ধা নিজের সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিলেন এক রাজনৈতিক নেতার নামে। তাও আবার তিনি যে সে নেতা নন। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নাতি। তাঁর বাবাও দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। রাজীব গান্ধী। রাজীব-তনয় রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) নামে লিখে দিলেন সমস্ত সম্পত্তি। আর অশক্ত বৃদ্ধার এহেন পদক্ষেপ নিয়ে গোটা দেশ জুড়ে চলছে জোর চর্চা। আলোচনার কেন্দ্রে পুষ্পা মুঞ্জিয়াল নামে দেরাদুনের বৃদ্ধা।
সম্পত্তি নিয়ে হিংসা-হানাহানির ঘটনা শোনা যায় প্রায়ই। কিন্তু দেরাদুনের (Dehradun) পুষ্পাদেবী যা ঘটালেন, তা নিখাদ আনন্দের। দেরাদুন মেট্রোপলিটান কংগ্রেসের সভাপতি লালচাঁদ শর্মা জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাহুল গান্ধীর নামে নিজের উইল করে গিয়েছেন বছর আটাত্তরের পুষ্পা মুঞ্জিয়াল। কেন এমনটা করলেন? প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত পুষ্পাদেবী লাজুকমুখে জানাচ্ছেন, রাহুলকে তাঁর বড্ড ভাল লাগে। তাঁর চিন্তাভাবনা প্রেরণা জোগায়। আর সেই কারণেই তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি রাহুলের নামেই লিখে দিলেন।
[আরও পড়ুন: আলিয়ার পর ভাইরাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও, তৃণমূলকে ‘পুড়িয়ে মারা’র নিদান বাম ছাত্রর]
পুষ্পাদেবী কী দিলেন সোনিয়াপুত্রকে? জানা গিয়েছে, নগদ ৫০ লক্ষ টাকা এবং ১০ তোলা সোনা দিয়েছেন তিনি। সারাজীবন ধরে এই সম্পত্তি জমিয়েছেন বছর আটাত্তরের বৃদ্ধা। আর পুষ্পা দেবীর সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার হলেন রাহুল। যদিও এমন আকস্মিক প্রাপ্তি নিয়ে রাহুলের এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলা মিডিয়াম’ নিয়ে RJ অয়ন্তিকার মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক, খোলা চিঠিতে পালটা রাহুলের]
কিন্তু কেন রাজীবতনয়ের প্রতি এতটা স্নেহপরবশ কেন হয়ে উঠলেন ওই বৃদ্ধা? যদিও তিনি জানিয়েছেন, রাহুলের চিন্তাভাবনা প্রেরণা জোগায়। আর তাঁর সেই ভাবনার জন্যই পুষ্পাদেবী সব লিখে দিয়েছেন রাহুলের নামে। সদ্যই বিধানসভা নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার বেছে নিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দারা। ভোটের আগে কংগ্রেসের ইস্তেহারে ছিল চমকপ্রদ জনদরদী সব প্রকল্প। ৫ লক্ষ পরিবারকে মাসিক ভাতা, সরকারি চাকরিতে ৪০ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ, এলপিজির দাম ৫০০ টাকার মধ্যে বেঁধে ফেলার মতো বেশ কয়েকটি জনমুখী প্রতিশ্রুতি। রাহুল গান্ধী সেসব নিয়ে ঢালাও নির্বাচনী প্রচারে সেরেছিলেন। কংগ্রেস যদিও উত্তরাখণ্ডে ক্ষমতায় আসেনি। রাহুলের সেসব উদ্দীপক বাণী গভীরভাবে দাগ কেটে গিয়েছে পুষ্পার মনে। রাহুলের বাণীতে প্রেরণা খুঁজে পেয়েছেন তিনি। রাহুলের মধ্যে নিজের উত্তরাধিকারের ছায়া দেখেছেন। আর তাতেই পুষ্পা মুঞ্জিয়াল সব দিয়ে দিলেন রাহুলকে।