অর্ণব আইচ: ভবানীপুরে জোড়া খুনের (Bhawanipore Double Murder Case) তিনদিনের মাথায় খুলছে রহস্যের জট। আগেই গ্রেপ্তার হয়েছিল ২ সন্দেহভাজন। তাদের জেরা করেই আরও একজনের সন্ধান মেলে। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, তৃতীয় ধৃত ব্যক্তি ওড়িশার বাসিন্দা। তবে তাকে কলকাতা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গুজরাটি দম্পতির মৃত্যুর কারণ ঘিরে এখনও ধন্দ রয়েছে।
স্রেফ ডাকাতির উদ্দেশে ভবানীপুরের গুজরাটি দম্পতিকে খুন করা হয়েছে নাকি এর পিছনে রয়েছে আর্থিক লেনদেন, তা নিয়ে এখনও ধন্দ রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বৃদ্ধ দম্পতির এক দূরসম্পর্কে আত্মীয় ১ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা ফেরত দেয়নি। ব্যবসায় মন্দার কথা বলে বারবার টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিতেন সেই আত্মীয়। শেষে ধারের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন অশোক শাহ। তার জেরেই এই ঘটনা ঘটল কি না, তা খতিয়ে দেখছে লালবাজার। ডাকাতির উদ্দেশ্যটা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: ভবানীপুর জোড়া খুন কাণ্ডে গ্রেপ্তার ২, তিনদিনের মাথায় খুলল রহস্যের জট]
ভবানীপুরের গুজরাটি দম্পতি খুনের পরতে পরতে রহস্য। তদন্তকারীরা প্রায় নিশ্চিত যে পরিচিত কেউ এসেছিলেন সেদিন দম্পতির কাছে। সেই কারণেই তাঁরা খুলে দিয়েছিলেন দরজা। মনে করা হচ্ছে, দরজার কাছে দাঁড়িয়ে হাতে সেভেন এমএম পিস্তল নিয়ে খুনি টার্গেট করে রশ্মিতা শাহকে। প্রৌঢ়া তখন বিছানা থেকে নেমে সবে পাশের ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি মুখ ফেরাতেই আততায়ীর গুলি মাথার পিছন দিক দিয়ে ঢুকে বেরিয়ে যায় কান দিয়ে। যদিও তার আগেই অত্যন্ত নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে রশ্মিতার স্বামী অশোক শাহকে।
পুলিশ জেনেছে, ৬০ লক্ষ টাকায় নিজেদের একতলার অংশ বিক্রি করার পরিকল্পনা করে শাহ পরিবার। ১৯৯৮ সালে এখানে ভাড়াটে হিসাবে আসে পরিবারটি। ২০০৫ সালে সেটি কিনে নেয় এই গুজরাটি পরিবার। এতদিন পর সেটি বিক্রি করা হয়। ব্রোকারের মাধ্যমে যে ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়, সেই ক্রেতার সঙ্গেও পুলিশ কথা বলেছে। এক সপ্তাহ আগে আগাম এক লক্ষ টাকা চেকে দেওয়া হয়। সম্ভবত সেই টাকারই অংশ বাড়িতে রেখেছিলেন অশোক শাহ। পুলিশকে শাহ দম্পতির ছোট মেয়ে দিশা জানিয়েছেন, তাঁদের কাঠের আলমারি থেকে লুঠ হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। যদিও পুলিশের দাবি, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতেই ঘরে জিনিসপত্র এলোমেলো করে দেওয়া হয়েছিল।