আলাপন সাহা: ভারত কিংবা পাকিস্তান দুটো টিমের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু বিশ্বের আর পাঁচজন ক্রিকেটপ্রেমীর মতো শনিবারের ভারত-পাক মহারণ নিয়ে তিনিও রীতিমতো উত্তেজিত। তিনি কিংবদন্তি মুথাইয়া মুরলীধরন। ভারত-পাক মহাযুদ্ধের আগে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে ফোনে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি স্পিনার।
দুটো টিমই শুরুটা খুব ভাল করেছে। দুটো ম্যাচ জিতে নামছে। শনিবার কী হবে মনে হচ্ছে?
মুরলী : দেখুন ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কোনও ভবিষ্যদবাণী চলে না। ক্রিকেটে কখন কী ঘটবে, আগাম বলাও যায় না। নির্দিষ্ট দিনে যারা ভাল খেলবে, কঠিন পরিস্থিতিতে যারা নার্ভ ধরে রাখবে, তারাই জিতবে। তবু বলব ম্যাচটা যেহেতু ভারতে নিজেদের ঘরে খেলছে, সেই সুবিধাটা ওরা পাবে। ঘরের মাঠের কন্ডিশনটা বিপক্ষের থেকে অনেক ভাল জানবে রোহিতরা।
[আরও পড়ুন: ICC ODI World Cup 2023:‘জিততে হলে বিরাটকে থামাও বাবর’, উত্তরসূরিকে বার্তা প্রাক্তন পাক অধিনায়ক শোয়েবের]
আপনি নিজে দীর্ঘদিন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সঙ্গে যুক্ত। আমেদাবাদে অনেক ম্যাচেও ছিলেন। কী মনে হয়, ওই পিচে ব্যাটাররা বাড়তি সাহায্য পাবে?
মুরলী : আইপিএলের সময় ছিলাম, সাম্প্রতিক আমি ওখানকার উইকেট দেখিনি। তাই এখন কেমন উইকেট হবে, বলতে পারব না। সাধারণত ওখানে পাটা উইকেট থাকে, মানে ফ্ল্যাট ট্র্যাক। এবারও হয়তো সেরকম কিছুই হবে। আর বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যেরকম ট্রেন্ড, তাতে বেশিরভাগ জায়গাতেই পাটা উইকেট হচ্ছে। আমার মনে হয় শনিবারও সেরকমই কিছু থাকবে। আরও একটা বড় রানের ম্যাচ দেখব আমরা।
কিন্তু পাকিস্তানের পেস অ্যাটাক ভাল। শাহিন শাহ আফ্রিদি বরাবর ভুগিয়ে এসেছে ভারতীয় ব্যাটিংকে…
মুরলী : আপনার সঙ্গে আমি একমত হতে পারছি না। এশিয়া কাপের সময়ও তো শাহিন ছিল। তাই বলে কী ভারত এশিয়া কাপে জেতেনি? ক্রিকেটে ওরকম কিছু হয় না। একা শাহিন সব করে দিয়ে যাবে, এটা হবে না। মানছি শাহিন ভাল বোলার। কিন্তু একা শাহিন কিচ্ছু করতে পারবে না। জিততে হলে টিম হিসাবে ভাল খেলতে হবে।
আগের ম্যাচে পাকিস্তান রেকর্ড রান তাড়া করে এসেছে। পাল্টা হিসাবে ছিল রোহিতের সেঞ্চুরি।
মুরলী : পাকিস্তান আগের ম্যাচে সাড়ে তিনশোর কাছাকাছি রান তাড়া করেছে ঠিকই, তবে সেটা অতীত। এটা নতুন ম্যাচ। রোহিতও আগের দিন দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করেছে। কিন্তু দুটো টিমকেই আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। ভারতীয় ব্যাটিং অসম্ভব শক্তিশালী। বিরাট কোহলি আছে। লোকেশ রাহুল আছে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কীরকম চাপের পরিস্থিতিতে দু’জন কী অনবদ্য ইনিংসটা খেলেছিল বলুন তো! বিরাট চ্যাম্পিয়ন। ও জানে চাপের পরিস্থিতিতে কী করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হল, কঠিন পরিস্থিতিতেও মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারে। সেটা অবশ্যই বড় ফ্যাক্টর হবে। তবে আবারও একটাই কথা বলব, ব্যাক্তিগত নৈপুণ্যের থেকেও দলগত পারফরম্যান্স অনেক বেশি দরকার। একজন ভাল খেলল, আর বাকিরা কেউ সেভাবে পারফর্ম করতে পারল না, তাহলে কি টিম জিতবে?
অনেকেই বলছেন লড়াইটা ভারতীয় ব্যাটিং বনাম পাকিস্তান বোলিং। আপনি একমত?
মুরলী : একেবারেই নয়। পাকিস্তানের বোলিং অ্যাটাক যেমন ভাল। ভারতের বোলিংও তেমন শক্তিশালী। জসপ্রীত বুমরা রয়েছে। মহম্মদ সিরাজ রয়েছে। স্পিন অ্যাটাকও দুর্দান্ত। যে কোনও টিমকে চাপে রাখার ক্ষমতা রয়েছে ভারতীয় বোলিং আক্রমণের। তাহলে কী করে বলবেন লড়াইটা পাকিস্তান বোলিং বনাম ভারতীয় ব্যাটিংয়ের? ম্যাচ জিততে হলে সব ডিপার্টমেন্টে আপনাকে ভাল করতে হবে।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন একেবারে শেষমুহূর্তে দলে ঢুকেছেন। শোনা যাচ্ছে পাকিস্তান ম্যাচে অশ্বিন খেলতে পারেন। অশ্বিনের থাকাটা কতটা ফ্যাক্টর হতে পারে?
মুরলী : অশ্বিন প্রচণ্ড অভিজ্ঞ। দুর্দান্ত বোলার। কিন্তু একা অশ্বিনের কথা বলছেন কেন? কুলদীপ কী দুর্দান্ত বোলিং করছে বলুন তো! বিপক্ষের মহার্ঘ উইকেট ছিনিয়ে নিচ্ছে। জাদেজাও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে দুরন্ত বোলিং করেছে। ভারতীয় স্পিন অ্যাটাককে সামলানো পাকিস্তানের কাছে চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।