shono
Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর নয়া উদ্যোগ, রাজ্যের স্কুলপাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত হল অঙ্গ প্রতিস্থাপন

অষ্টম শ্রেণিতে বিষয়টি অবশ্যপাঠ্য হচ্ছে। The post মুখ্যমন্ত্রীর নয়া উদ্যোগ, রাজ্যের স্কুলপাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত হল অঙ্গ প্রতিস্থাপন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:52 AM Oct 23, 2018Updated: 08:52 AM Oct 23, 2018

দীপঙ্কর মণ্ডল: নশ্বর জীবনের শেষে কিছু চাওয়া থেকে যায়। থাকে অমরত্বের প্রত্যাশা। যা পূরণ করতে পারে মরণোত্তর অঙ্গদানের অঙ্গীকার। যা মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকার অন্যতম উপায়। মৃত মানুষের দৃষ্টি ফিরে আসে অন্যের চোখে। প্রিয় মানুষটি চলে গেলেও তাঁর হৃৎপিণ্ড চালু থাকে ভিন্ন শরীরে। একইভাবে ফুসফুস, কর্নিয়া, যকৃৎ, অগ্নাশয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিও সঠিক সময়ে কাজে লাগালে অমর হতে পারে। এহেন ‘অঙ্গ প্রতিস্থাপন’ বিষয়টিকে এবার স্কুলপাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বিষয়টি অবশ্যপাঠ্য হচ্ছে।

Advertisement

বস্তুত রাজ্য সরকার এই মুহূর্তে অঙ্গ প্রতিস্থাপনে তুমুল উৎসাহ দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে পুলিশকে উদ্যোগী হতে বলেছেন। ‘ব্রেন ডেথ’ হওয়া মানুষের অঙ্গ স্থানান্তরের সময় রাস্তার সমস্ত সিগন্যাল সবুজ রাখা হয়। ‘গ্রিন করিডর’ বানিয়ে পাইলট সামনে রেখে বিভিন্ন হাসপাতালে পৌঁছে যায় মৃতের নানা অঙ্গ। ২০১৬ সালে প্রথম গ্রিন করিডর ব্যবহার করে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছিল বাংলায়। উত্তর ২৪ পরগনার স্কুল ছাত্র স্বর্ণেন্দু রায় এক দুর্ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে ভরতি ছিল। চিকিৎসকরা ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার পর পরিবার অঙ্গদান করার সিদ্ধান্ত নেয়। সন্তানের কিডনি, চোখ ও লিভার দান করতে সম্মত
হন মৃতের বাবা-মা। সেইমতো কলকাতার ইএম বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে গ্রিন করিডরের মাধ্যমে অঙ্গগুলি পৌঁছে যায় শহরের অন্য তিনটি হাসপাতালে। সংশ্লিষ্ট রোগীদের দেহে প্রতিস্থাপনের জন্য যাত্রা পথে যাতে কোনও বাধা না আসে তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।

আগেই সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপন শুরু হয়ে গিয়েছিল এ রাজ্যে। এবার তার পুরো বৃত্তান্ত স্কুলের বইয়ে পড়বে ছাত্রছাত্রীরা। বসিরহাটের স্বর্ণেন্দুর পাশাপাশি স্কুলপাঠ্যে থাকছে পর্ণশ্রীর কাজরী বসু, শোভনা সরকার, প্রীতম সাহাদের মতো অঙ্গদাতাদের নাম। রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অষ্টম শ্রেণির স্বাস্থ্য ও শারীর শিক্ষা পাঠ্যক্রমে বিষয়টি ঢোকানো হবে। স্কুলশিক্ষা বিশেষজ্ঞ কমিটির উদ্যোগে বই ছাপানোর কাজও শেষ। বইটি সম্পাদনা করেছেন দীপেন বসু। তিনি জানিয়েছেন, “রাজ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলছে। পড়ুয়াদের অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত প্রাথমিক পাঠ দেওয়ার তালিমও চলছে। রাজ্যে যে ১২ হাজার শারীর শিক্ষার শিক্ষক আছেন, তাঁদেরও প্রশিক্ষিত করা হবে।” দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, “অমরত্ব লাভের সবচেয়ে সহজ পথ অঙ্গদান। বসিরহাট স্কুলের ছাত্র স্বর্ণেন্দুর মৃত্যু ওই স্কুলের সবাইকে প্রবল নাড়া দেয়। আমরা সবাইকে জানাতে চাই, ওই ছাত্রের পুরোপুরি মৃত্যু হয়নি। অন্যের শরীরে সে এখনও বেঁচে আছে। অঙ্গদান বিষয়টি অনেক পড়ুয়া বা তাদের অভিভাবক জানেন না। তা জানাতেই স্কুলপাঠ্যে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।”

পাশাপাশি আপামর জনমানসে সচেতনতা বৃদ্ধির নানা প্রক্রিয়াও চলছে। জনপ্রিয় শিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র অঙ্গদান সম্পর্কে গান গেয়েছেন। একটি সংস্থা ভিডিও অ্যালবামও তৈরি করেছে তা নিয়ে। দেবশংকর হালদার, সোহিনী সেনগুপ্ত, চৈতি ঘোষাল, রূপংকর বাগচি, অরুণ লাল, সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রসেনজিৎ, সোহম, জিতের মতো মেগা তারকারা অঙ্গদানের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন। স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপন বিষয়টি আরও সহজভাবে বোঝাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ চাইলে এই ভিডিওটি পড়ুয়াদের দেখাতে পারে। কলকাতায় প্রথম হৃদয় প্রতিস্থাপন করা কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডা. তাপস রায়চৌধুরি জানিয়েছেন, “অঙ্গদান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আড়ষ্টতা রয়েছে। অন্যদিকে ব্রেন ডেথ ঘোষণা নিয়েও চিকিৎসকদের একাংশের অনিহা আছে। অঙ্গদানের ফলে কত জীবন যে বেঁচে যায় তা অনেকে মানতে চান না। স্কুলপাঠ্যে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।”

The post মুখ্যমন্ত্রীর নয়া উদ্যোগ, রাজ্যের স্কুলপাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত হল অঙ্গ প্রতিস্থাপন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার