shono
Advertisement

ব্যথার দরজা বন্ধ করে নতুন জীবন, আর জি করে খুলছে ‘পেইন ক্লিনিক’

‘পেন ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানে্ একটি শাখা রয়েছে।
Posted: 11:48 AM Mar 04, 2022Updated: 01:27 PM Mar 04, 2022

গৌতম ব্রহ্ম:কেউ যন্ত্রণায় কোমর সোজা করতে পারেন না। কারও আবার বসতে গেলে প্রাণ বেরিয়ে যায়। কারও ঘাড়ে অসহ্য ব্যথা, কারও হাঁটুতে। কারও আবার সারা শরীরে।

Advertisement

ব্যথার (Pain) হরেক অসুখ, হরেক উপসর্গ। নিজে থেকে ঠিক হয়ে যাবে ভেবে বেশিরভাগ সময়ই আমরা মুখ বুজে ব্যথা সহ্য করি। কখনও পাড়ার ওষুধের দোকান থেকে পেনকিলার কিনে খাই। ফল হয় মারাত্মক। ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা ব্যথা হঠাৎই দাবানলের চেহারা নেয়। পরিস্থিতি চলে যায় নাগালের বাইরে। এমন ব্যথাতুর রোগীদের শাপমুক্ত করছে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (R. G. Kar Medical College Hospital)  অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের অধীনস্থ ‘পেন ক্লিনিক’। এখানে সব ধরনের ব্যথার চিকিৎসা হচ্ছে। তা সে ‘ক্রনিক লো ব্যাক পেন’ হোক বা ডায়াবেটিক পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি, ফাইব্রোমায়োলজিয়া হোক বা বার্জার ডিজিজ। ‘পেন ক্লিনিক’-এর নেতৃত্বে অধ্যাপক ডা. দীপশ্রী ভট্টাচার্য। অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের প্রধানের নেতৃত্বেই ব্যথার দরজা বন্ধ করছেন একদল চিকিৎসক। নতুন রোগীদের জন্য মঙ্গলবার ও শুক্রবার। আর পুরনো রোগীদের জন্য বৃহস্পতিবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অস্ত্রোপচার বা অন্য ‘ইন্টারভেনশন’—এর জন্য শনিবার। এপিডুরাল বা মেডিয়াল ব্রাঞ্চ ব্লক থেকে কেমিক্যাল নিউরোলাইসিস, সিআরপিএস থেকে প্লেটলেট রিচ প্লাজমা থেরাপি। ব্যথার সর্বাধুনিক চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। এমনটাই দাবি করলেন দীপশ্রীদেবী। তাঁর বক্তব্য, ব্যথা নিজেই একটি রোগ। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই ব্যথা নিয়ে চরম উদাসীনতা। সহ্যের মাত্রা না ছাড়ালে কেউ ডাক্তারের কাছে আসেন না। দুঃখের বিষয় হল, বেশির ভাগ ডাক্তারেরও এই নিয়ে সম্যক ধারণা নেই। ব্যথা হলেই হয় অস্থি—শল্যচিকিৎসক কিংবা নিউরো সার্জনদের কাছে রোগীকে ‘রেফার’ করেন। অথচ, ‘পেন ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আস্ত একটি শাখা রয়েছে। আমাদের কলেজে ফেলোশিপ প্রোগ্রামও করানো হয়। পাঁচটা আসন আছে। দীপশ্রীদেবীদের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন ব্যথা বিশেষজ্ঞ ডা. সুব্রত গোস্বামী। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “শুরু করেও মেডিক্যাল কলেজ এই ফেলোশিপ প্রোগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে। দীপশ্রীদিরা কিন্তু এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। বহু রোগীকে ব্যথামুক্ত করছে। যা অন্য মেডিক্যাল কলেজের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ।”

[ আরও পড়ুন: অ্যাপ ক্যাব দৌরাত্ম্য কমানোর উদ্যোগ, সর্বোচ্চ ভাড়া বেঁধে দিল রাজ্য সরকার]

২০১১ সাল থেকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয়েছে পেন ক্লিনিক। দীপশ্রীদেবী নিজে ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। নিজের ব্যথা কমাতে গিয়েই ‘পেন ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। বুঝতে পারেন, ব্যথার দরজা বন্ধ করতে তাঁর বিষয় অর্থাৎ অ্যানাস্থেশিয়া অনেক বেশি কার্যকর। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ব্যথা বিশেষজ্ঞ ডা. সুব্রত গোস্বামী। সেই থেকেই শুরু। এখন ফি মঙ্গল—শুক্র ভিড় উপচে পড়ে ক্লিনিকে। খুশি কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সন্দীপ ঘোষ। জানালেন, “বেসরকারি ক্ষেত্রে ব্যথা নিরাময়ের চিকিৎসা গরিব মানুষের নাগালের বাইরে। আর এখানে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা।” 

[ আরও পড়ুন:লরি ও টোটোর ধাক্কা, প্রতিবাদে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের পর আগুন স্থানীয়দের, রণক্ষেত্র কাঁথি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement