অর্ণব আইচ: এবার ‘ভারচুয়াল যুদ্ধে’ই নামছে লস্কর-ই-তইবা (Lashkar-e-Taiba)। এখন সাইবার নাশকতার দিকে বেশি নজর পাকিস্তানের এই জঙ্গি সংগঠন। সেই কারণেই পাকিস্তানে বসেই ‘ভারচুয়াল’ পদ্ধতিতে সদস্য নিয়োগ করছে লস্কর। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থেকে লস্কর সদস্যা তানিয়া পারভিনকে গ্রেপ্তারের পর এবার কর্ণাটকের সিরসি থেকে সৈয়দ এম ইদ্রিশ ওরফে মুন্না নামে এক জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। তাকে জেরায় লস্করের এই ভারচুয়াল বা সাইবার হামলার ছকের বিষয়ে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যে সারা দেশজুড়ে তানিয়া বা ইদ্রিশের মতো লস্করের অন্তত আটজন মাথার সন্ধান মিলেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ইদ্রিশকে সঙ্গে নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছন এনআইএ আধিকারিকরা। শুক্রবার তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালত ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: করোনা কালে বাজেটে কাটছাঁট, ‘ব্রাত্য’ ডাকিনী-যোগিনী, কমল ৪০ ফুটের কালীর উচ্চতাও]
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এবার সাইবার নাশকতা বা ভারচুয়াল যুদ্ধ শুরুর ছক কষছে লস্কর-ই-তইবা। সরাসরি নাশকতা ছাড়াও সাইবার নাশকতা করে একের পর এক সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করার ছক কষছে এই জঙ্গি সংগঠন। এমনকী, ব্যাংকের সাইট হ্যাক করার ছকও রয়েছে তাদের। তার জন্য লস্কর সাহায্য নিচ্ছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের। এমনকী, পিছনে চিনের (China) মদত রয়েছে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা। বরং এমন তথ্যও গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে যে, বিস্ফোরণের মতো নাশকতার থেকে সাইবার নাশকতাকে নিজেদের পক্ষে বেশি নিরাপদ মনে করছে লস্কর। তাই এই নাশকতাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জঙ্গিরা। আর নিরাপদ হওয়ার কারণেই ভার্চুয়াল নিয়োগের উপরই জোর দিচ্ছে এই জঙ্গি সংগঠন।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তত আটজন তরুণ ও তরুণীর সন্ধান তাঁরা পেয়েছেন, যাদের আপাতত এই দেশে ‘ভার্চুয়াল চঁাই’ বলেই মনে করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে এই রাজ্যে তানিয়া ছাড়া আরও কেউ রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। ইদ্রিশের মোবাইল ও সিমকার্ড উদ্ধার করেছে এনআইএ। অন্তত ৫০টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সঙ্গে যোগ রয়েছে ইদ্রিশ ওরফে মুন্নার। এই গ্রুপগুলির মধ্যে বেশিরভাগই জিহাদি গ্রুপ। কয়েকটির অ্যাডমিন পাকিস্তানের লস্কর হ্যান্ডলার। পাকিস্তান থেকে লস্কর-ই-তইবা সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ তৈরি করে জানার চেষ্টা করছে, এই দেশের কোন তরুণ বা তরুণীরা লস্করের আদর্শে বিশ্বাসী। পাকিস্তানের লস্করের হ্যান্ডলাররা তাদের সঙ্গে সরাসরি অনলাইনে যোগাযোগ করে। তাদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটও হয়। তাদের বলা হয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে আরও তরুণ ও তরুণীকে যুক্ত করে মগজধোলাই করতে। ইদ্রিশও সেই কাজ করতে শুরু করেছিল।