অভিরূপ দাস: গ্রাম গঞ্জ নয়। খাস কলকাতার ঝা চকচকে পার্ক লেন, রয়েড স্ট্রিট, ইলিয়ট রোড। দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত এই পাড়ায় মিশকালো চারপেয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। অভিজাত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতে বাথরুমে গেলেই আক্রমণ করছে চারপেয়ে এক জন্তু। শুধু তাই নয় পোষা পাখী, বেড়াল মুখে করে নিয়ে যাচ্ছে। কি সেই কালো প্রাণী? আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, এ কাণ্ড ভাম বেড়ালের। চেতলা এলাকাতেও এদের দৌরাত্ম ছিল মারাত্মক। এদিন পুরসভায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, আমার ঘরেও একসময় আনাগোণা ছিল ভামবেড়ালের। কেবলের তার বেয়ে ঘরে চলে আসতো। এখন যেখানে চেতলা সুইমিং পুল তা আগে ছিল ভাম বিড়ালদের আখড়া। বনদফতরকে বলে বলেই খালি করা হয়েছে ওই জায়গা।
তবে অগুনতি এশিয়ান পাম সিভেট বা ভাম বেড়াল এখনও রয়ে গিয়েছে শহরের বন্ধ কারখানায়, ঝোপে ঝাড়ে, মান্ধাতার আমলের বাড়ির চিলেকোঠায়। এদিন ইলিয়ট রোড থেকে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করেন নাদিরা আহমেদ। নাদিয়ার কথায়, ‘‘বাড়ির পাশে একটা প্যাসেজ ছিল। সেটা এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মশার উৎপাত তো ছিলই। কিন্তু এবার অদ্ভুত কালো জন্তুরা বাসা বেঁধেছে ওখানে। যখন তখন তারা আঁচড়ে দিচ্ছে।’’ সব শুনে মেয়র আশ্বাস দেন, দ্রুত ওই প্যাসেজ পরিস্কার করে দেওয়া হবে। তাতে সন্তুষ্ট নন নাদিরা। তাঁর অনুরোধ, ওই জন্তুগুলোকে ধরার ব্যবস্থা করুন। মেয়র জানিয়েছেন, তা সম্ভব নয়। নিয়ম অনুযায়ী শুধুমাত্র বনদফতর এই ধরণের জন্তু ধরতে পারে। ভামবিড়াল দেখা গেলে তাই ২৩৩৪ ৬৯০০ অথবা ২৩৫৮ ৩২০৮ নম্বরে ফোন করে খবর দিতে হয় বনদফতরকে।
[আরও পড়ুন: নির্দল প্রার্থীর সমর্থককে পিটিয়ে ‘খুন’, ভোট পরবর্তী অশান্তিতে থমথমে নাকাশিপাড়া]
শহরে ভাম বেড়ালের উৎপাত নতুন নয়। বছর তিনেক আগেই যাদবপুর এলাকায় ভাম বিড়াল পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর তাপস দাস জানিয়েছেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের শিডিউল ওয়ান তালিকায় পড়ে এই ভামবেড়াল। ভামবেড়াল হত্যা আইনত দন্ডনীয়। ডিরেক্টর জানিয়েছেন, এরা মূলত ফলমূল অথবা ছোটও পশু পাখী খায়। এদিকে ভাম বিড়াল কামড়ে দেওয়ার ঘটনায় সাবধান হতে বলছেন চিকিৎসকরা। একাধিক পশুর লালায় থাকে র্যাবিস লিসা ভাইরাস। যা জলাতঙ্ক অসুখের কারণ। দক্ষিণ দমদম পুরসভার অ্যান্টি রেবিজ টিমের ডা. গৌতম সরখেল জানিয়েছেন, রেবিজ অসুখের অন্যতম বাহক এই ভামবেড়াল। তাই তার কামড়ে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক।